Home ব্রেকিং ০৪-০৫ অক্টোবর এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও ৮৫জন নারী-উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে ৭ম ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন...

০৪-০৫ অক্টোবর এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও ৮৫জন নারী-উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে ৭ম ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন ও পণ্য মেলা ২০২৩: উদ্বোধন করেছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী


০৪-০৫ অক্টোবর এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সটিটিউটে ৭ম ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন ও পণ্য মেলা ২০২৩ আয়োজন করা হয়েছে। সম্মিলনে অংশগ্রহণ করছেন বুটিক, পাটজাত, চামড়াজাত, হস্তশিল্প, জুয়েলারিসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী ৮৫জন নারী-উদ্যোক্তা। ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ৭ম ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন ও পণ্য মেলা উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাকিয়া এবং ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। পুরো কার্যক্রম সম্পর্কে আলোকপাত করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন ও পণ্য মেলা ২০২৩’ এসএমই ফাউন্ডেশনের একটি সময়োগযোগী আয়োজন। এই সম্মিলনের মাধ্যমে আমাদের দেশীয় পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের কর্মজীবী নারীদের একটা বিশাল অংশ এসএমই খাতের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ঘরে ঘরে ছোট ছোট শিল্প গড়ে তোলার জন্য নিরলস কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ডিসপ্লে সেন্টার তৈরি করাসহ ফাউন্ডেশনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসহ একটি জায়গা বা প্লট বরাদ্দ প্রদানের বিষয়টি শিল্প মন্ত্রণালয়ের নজরে রয়েছে বলেও জানান শিল্প প্রতিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের ৭৮ লাখের বেশি সিএমএসএমই শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শতকরা মাত্র ৭.২১ ভাগ নারী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। যদিও নারীর জন্য সহায়ক কর্মপরিবেশ তৈরি এবং নানাবিধ প্রণোদনার কারণে দেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। তবে এসএমই ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় দেখা যায়, পণ্যের বাজার সংযোগ বা বাজারজাতকরণ নারী-উদ্যোক্তাদের জন্য অন্যতম প্রধান একটি বাধা। ব্যবসা শুরুর দিকে এই সমস্যা আরও প্রকট। ৩৭ শতাংশ নারী-উদ্যোক্তা পূঁজি সংকটের কথা বললেও ২০ শতাংশ নারী-উদ্যোক্তা প্রধান সমস্যা হিসেবে পণ্যের বাজারজাতকরণকে চিহ্নিত করছেন। উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক প্রসার সহজতর হবে। এই প্রেক্ষাপটে নতুন নারী-উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সংযোগ তৈরির মাধ্যমে পণ্যের বাজারজাতকরণ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন নারী-উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে ৭ম বারের মতো ‘ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন ও পণ্য মেলা’ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। সম্মিলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৮৫জন সম্ভাবনাময় নারী-উদ্যোক্তা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাণিজ্যিক ক্রেতাদের জন্য প্রদর্শন করবেন। পণ্যের গুণগত মান, ডিজাইন, রংয়ের ব্যবহার, পাইকারি দাম এবং উৎপাদন সক্ষমতা যাচাইয়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ক্রেতাগণ অংশগ্রহণকারী নারী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে থেকে সাপ্লাইয়ার নির্বাচন করতে পারবেন। ক্রেতাদের সুবিধার্থে অংশগ্রহণকারী নারী-উদ্যোক্তাদের তথ্য সম্বলিত একটি ক্যাটালগও তৈরি করা হয়েছে। এই সম্মিলন একদিকে নারী-উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে অন্যদিকে বাণিজ্যিক ক্রেতা বা খুচরা বিক্রেতাদের পণ্যের সরবরাহ উৎস বা যোগানদাতা খুঁজে পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সম্মিলনের প্রস্তুতি পর্বে দেশের শীর্ষ ডিজাইনার এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের নির্দেশনায় অংশগ্রহণকারী নারী-উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিতকরণ, চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ডিজাইন ব্যবহার এবং পাইকারি মূল্য নির্ধারণ কৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ০৪ অক্টোবর ২০২৩ সকাল ১০.০০ টা ০৩.০০ টা পর্যন্ত বাণিজ্যিক ক্রেতাদের জন্য এবং বিকাল ০৩.০০ টা থেকে রাত ০৮.০০ টা ও পরদিন ০৫ অক্টোবর ২০২৩ সকাল ১০.০০ টা রাত ০৮.০০ টা পর্যন্ত ‘ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন ও পণ্য মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া এসএসই ফাউন্ডেশন দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পণ্য বিশেষ করে নকশিকাঁথা, পার্বত্য চট্টগ্রামের কোমর তাঁত, মনিপুরী তাঁত, কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বেড সিট, পাবনা শাহজাদপুরের গামছা, টাঙ্গাইলের শাড়ী, মানিকগঞ্জ ঘিওরের বাঁশ-বেত, পটুয়াখালী বাউফলের মৃৎ শিল্প পণ্যের যুগোপযোগীকরণ এবং বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যেও বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গত ৬টি ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলনে প্রায় ৩০০-জন নারী-উদ্যোক্তা পণ্য প্রদর্শন করেন। তম্মধ্যে প্রায় ৮০জন নারী-উদ্যোক্তা বর্তমানে দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সরবরাহ করছেন, প্রায় ১০০জন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পণ্য দিয়ে থাকেন এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অংশগ্রহণকারী নিজেই প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এসএমই ফাউন্ডেশনের এই আয়োজনও দেশের নারী-উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সংযোগ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।