Home ব্রেকিং যুবলীগে পরিচ্ছন্ন নেতৃত্ব আনতে কঠোর অবস্থানে পরশ-নিখিল

যুবলীগে পরিচ্ছন্ন নেতৃত্ব আনতে কঠোর অবস্থানে পরশ-নিখিল

37
0
SHARE

বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা প্রতিবেদক : ক্যাসিনো, দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও বিতর্কমুক্ত করে সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরিচ্ছন্ন নেতৃত্ব উপহার দিতে চায় যুবলীগ। এজন্য পরিচ্ছন্ন যুবলীগ গড়তে সংগঠনটির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
ইতোমধ্যে লক্ষ্য বাস্তবায়নে বেশকিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন এ দুই নেতা। এর মধ্যে সারা দেশের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দিয়েছেন কঠোর নির্দেশনা। যা যুবলীগের রাজনীতিতে নতুন মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত সেপ্টেম্বর মাসে দখল-চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-অস্ত্রবাজি-ক্যাডারবাজি, ক্যাসিনোসহ অবৈধ পন্থায় অঢেল সম্পত্তি ও সরকারি দলের ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানে নামে সরকার।
শুদ্ধি অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। অভিযানে আটক ও পদ হারায় সংগঠনটির একাধিক প্রভাবশালী নেতা। অব্যাহতি দেয়া হয় তৎকালীন যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীকে।
লাপাত্তা হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা। যুবলীগের মতো একটি সংগঠিত ও শক্তিশালী সংগঠনের এ ধরনের বিতর্কিত নেতাদের নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ত্যাগী,
মেধাবী এবং পরীক্ষিত নেতাদের নেতৃত্বে আনার উদ্যোগ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরবর্তীতে গত ২৩ নভেম্বর সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক হন দীর্ঘ সময় যুবলীগের রাজনীতিতে স্বচ্ছ পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে পরিচিত মাইনুল হাসান খান নিখিল।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর যুবলীগের ঐহিত্য ফিরিয়ে এনে বিতর্কমুক্ত যুবলীগ গঠনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার ঘোষণা দেন শীর্ষ দুই নেতা।
যুবলীগ সূত্র মতে, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই যুবলীগকে ঢেলে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী- ত্যাগী, পরিচ্ছন্ন ও মেধাবী নেতৃত্ব আনতে কাজ করছেন।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিতর্কিত এবং ভিন্নপন্থি কাউকে ঠাঁই না দিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তারা। এজন্য পদপ্রত্যাশী নেতাদের বায়োডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। দপ্তরে জমাকৃত বায়োডাটা অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বিশেষ সেল গঠন করেছেন।
পদপ্রত্যাশী নেতাদের এবং পরিবারের ইতিহাস খোঁজখবর নিয়ে পদে আনা হবে। কোনোভাবেই স্বাধীনতাবিরোধী পরিবার, ভিন্ন মতের এবং বিতর্কিত কাউকে যুবলীগের রাজনীতিতে সুযোগ দেয়া হবে না বলে সকলকে সতর্ক করেছেন তারা।
এদিকে, কেন্দ্রের পাশাপাশি মহানগর, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডপর্যায়ের যুবলীগকেও ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন শীর্ষ দুই নেতা। ইতোমধ্যে তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে বেশকিছু কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন— (১) জেলা-মহানগরাধীন উপজেলা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড নেতারা পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড, বিলবোর্ড করার পূর্বে ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ ইউনিয়ন ও মহানগর নেতৃবৃন্দের, ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ উপজেলা নেতৃবৃন্দের, উপজেলা নেতৃবৃন্দ জেলা নেতৃবৃন্দের এবং জেলা-মহানগর নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অনুমতি নিতে হবে। (২) সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের সাথে জড়িত বা সংগঠনের অননুমোদিত কোনো ব্যক্তি পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড, বিলবোর্ড বানাতে পারবেন না। (৩) পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জেলা, জেলাধীন-উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং মহানগর, মহানগরাধীন থানা, ওয়ার্ড, ইউনিট কমিটি বিলুপ্ত করা বা নতুন করে গঠন করা যাবে না। (৪) জেলা-মহানগরাধীন উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে যেসব ইউনিটে বর্তমানে কোনো কমিটি নাই তার তালিকা আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে যুবলীগ কেন্দ্রীয় দপ্তরে প্রেরণ করতে বলা হয়েছে। (৫) যুবলীগের জেলা ও মহানগরাধীন সকল উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটির এবং সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় নেতা (যদি থাকে) তাহাদের নাম ও মোবাইল নাম্বারসহ আগামী ৭ দিনের মধ্যে দপ্তর সেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
image_pdfimage_print