
ইরাকে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের অঘোষিত সেনাপতি ও দেশটির ক্ষমতাধর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় মার্কিনিদের উপর চরম প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। তাই এখন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধে সামরিক শক্তির দিক দিয়ে কতটা সক্ষম ইরান?
সামরিক শক্তির বিচারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যেখানে শীর্ষে সেখানে ইরানের অবস্থান ১৪তম। তা সত্ত্বেও বলাই যায় মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের অবস্থান খুবই শক্ত। তাই সামরিক শক্তিতে শক্তিধর যুক্তরাষ্ট্রকে একহাত নেয়ার ক্ষমতা আছে ইরানের।
অন্যদিকে পারমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকে এগিয়ে তালিকায়ও শীর্ষে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমান পেক্ষাপটে শক্তির যুদ্ধের ময়দানে যে দেশের কাছে রাসায়কি অস্ত্র আছে তাকেই এগিয়ে রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ হলেও এখন পর্যন্ত ইরানের বোমা নেই বলে ধারণা করা হয়। মার্কিনিদের হাতে ৭ হাজার ২০০টি পারমাণবিক বোমা রয়েছে। তাই পারমাণবিক শক্তির দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা পারমাণবিক বোমার ধ্বংসলীলা কথা এখন সবাই জানে। বোমা দুটিতে ২ লাখের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। তাই যুক্তরাষ্ট্র নিজেও চাইবে না এই অস্ত্র ব্যবহার করতে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পারমাণবিক বোমার চেয়েও ৭০০ গুণ বেশি শক্তিশালী বোমা রয়েছে। যা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ধুলিশ্বাত করে দিতে পারে। আর সেটি হলো হাইড্রোজেন বোমা। এর আরও এক নাম থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা। হাউড্রোজেনের আইসোটোপের নিউক্লিয় সংযোজন পদ্ধতিতে এই বোমা কাজ করে। এই বোমা বিস্ফোরণের ফলে যে উত্তাপ তৈরি হয় সেটি সূর্যের মধ্যস্থিত শক্তির সমান। এখনও পর্যন্ত হাইড্রোজেন বোমা কোন যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়নি।
হাইড্রোজেন বোম দুই প্রক্রিয়ায় বিস্ফোরণ হয়। প্রথমে নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণ হয়। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে তাপ উত্পন্ন হয়। তারপর সেটি নিউক্লিয়ার ফিউশনকে উদ্দীপ্ত করে। পুরো প্রক্রিয়ায় বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে।
মার্কিন সেনা প্রথম হাইড্রোজেন বোমা টেস্ট করে ১৯৫২ সালে। পারমাণবিক বোমার চেয়ে এটি ৭০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। এর এক বছর পর সোভিয়েত ইউনিয়ন নিজের হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। সালটি ছিল ১৯৬১। তসার বোম্বা নামে একটি হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় তারা।