
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঢাকা-১০ সহ তিনটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন পেছানোর দাবি উঠলেও নির্ধারিত দিনে ভোট গ্রহণে অনড় নির্বাচন কমিশন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে অনির্ধারিত কমিশন বৈঠক শেষে একথা বলেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. আলমগীর। তিনি আরো বলেন, উপ-নির্বাচন আগামী ২১ মার্চই অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা হাত ধুয়ে ভোট দেবেন। ভোট দিয়ে আবার হাত ধোবেন। তাহলেই হবে। তবে ইসির এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।
‘সাংবিধানিক বাধ্যবাধকাতার কারণেই এ নির্বাচন করতে হবে। ২১ মার্চ ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনের উপ-নির্বাচন হবে। তবে ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিসহ আরও দুটি সংসদীয় আসনে উপ-নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তিতে সিদ্ধান্ত হবে’ বলে জানান ইসি সচিব।
করোনাভাইরাসে ইতিমধ্যে প্রথমবারের মতো দেশে একজন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ জন। এ পরিস্থিতিতে সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করার পর বিএনপিসহ সচেতন মহল থেকে দাবি উঠেছিল এই তিন আসনের উপনির্বাচনও পেছানোর।
সে দাবি নাকচ করে দিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘বৈঠকে কমিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। এই নির্বাচন বন্ধ করলে সুবিধা কি এবং না করলে কি সুবিধা- এসব বিবেচনা করে সব মিলিয়ে ২১ মার্চ নির্বাচন হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ভাইরাসের কারণে প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে সেখানে হ্যান্ড সেনিটাইজারসহ অন্যান্য সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।’
সচিব বলেন, ‘ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন যাতে বন্ধ হয় এ ধরনের কোনো অনুরোধ প্রার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। নির্বাচন কমিশন সচিবের ভাষায় তারা এ বিষয়ে অনেক শ্রম ও টাকা-পয়সা খরচ করেছেন। এখন যদি নির্বাচন বন্ধ করা হয় তাহলে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। নতুন করে ভোটের তারিখ নির্ধারণ করলে তাদের অনেক টাকার অপচয় হবে। এসব কথা চিন্তা করে ভোটের দিন না পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া দেশে করোনাভাইরাস এখনো মহামারি আকারে ছড়ায়নি। তাই ভোট হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘একজন ভোট দিলেও সেটা ভোট। আমরা চিন্তা করেছি খুব ভালো পরিবেশে যেহেতু ভোটার উপস্থিতি কম ছিল, তাই করোনার কারণে ভোটার কম হবে এটা ধরেই নেয়া হয়েছে। তাই করোনার সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনাও কম।’
এসময় সাংবাদিকরা জানতে চান- উপ-নির্বাচনে এমনিতে ভোটারদের উপস্থিতি কম হয়। আবার করোনার কারণে ভোটার সংখ্যা কমে যাবে কিনা। এই ধরনের প্রশ্নের উত্তরে মো. আলমগীর বলেন- ‘আমরা চিন্তা করেছি খুব ভালো পরিবেশে যেহেতু ভোটার উপস্থিতি কম ছিল, তাই করোনার কারণে ভোটার কম হবে এটা ধরেই নেয়া হয়েছে। তাই করোনার সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনাও কম।’
এই ভোটের কারণে যদি কেউ সংক্রামিত হয় কিংবা এর সংখ্যা বেড়ে যায় তাহলে এর দায় দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন নেবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। প্রতিটি বুথের পাশে ব্যানার থাকবে। কি করণীয় ব্যানারে তার দিক নির্দেশনা থাকবে।’
নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী আইন অনুযায়ী যিনি বেশি ভোট পাবেন তিনি জয়ী হবেন। ভোটার উপস্থিতি কোনো বিষয় না।’
জাতীয় পরিচয় পত্র সংক্রান্ত সব ধরনের সেবা বন্ধ থাকবে জানিয়ে ইসি সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘প্রবাসীরা এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে এ আশঙ্কায় এনআইডি সংক্রান্ত সেবা বন্ধ থাকবে।’
এদিকে ইসির নির্বাচন না পেছানোর সিদ্ধান্তকে অনৈতিক আখ্যা দিয়েছে বিএনপি।
নির্বাচন স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অমানবিক আচরণ করেছে নির্বাচন কমিশন। আমরা আহ্বান জানাই জনগণের স্বার্থে মানুষের স্বার্থে নির্বাচন স্থগিত রাখবে ইসি। কারণ এখন বাইরের মানুষের প্রয়োজন নেই সচেতন না থাকলে দেশের মধ্যেই যারা আক্রান্ত তাদের মাধ্যমেই করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান, এসএম আসাদুজ্জামান, জনসংযোগ পরিচালক মোহা. ইসরাইল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।