Home জাতীয় ‘চাকরি গেলে না খেয়ে মরতে হবে তাই যাচ্ছি’, পাটুরিয়ায় ঢাকামুখী মানুষের ঢল

‘চাকরি গেলে না খেয়ে মরতে হবে তাই যাচ্ছি’, পাটুরিয়ায় ঢাকামুখী মানুষের ঢল

35
0
SHARE

প্রাণঘাতি করোনভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কর্মমুখী রাজধানীফেরত হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে। আজ শনিবার সকাল থেকে ফেরিতে পদ্মা নদী পার হয়ে ঘাটে এসে গাড়ির জন্য অপেক্ষায় আছেন তারা।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে সবাই ট্রাক, রিকশা ও ভ্যানে গাদাগাদি করে ফিরছেন ঢাকার দিকে। আবার অনেকে পায়ে হেঁটে রওনা দিচ্ছেন। এদের বেশিরভাগ লোকজন ঢাকাসহ আশে পাশে এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিক। এসময় নারী ও শিশুদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব কর্মমুখী মানুষ।
জানা গেছে, আগামীকাল রবিবার থেকে রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে পোশাক কারখানাগুলো খুলে যাবে। এ কারণে এসব পোশাক কারখানা শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার দিকে ফিরছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা কাজীরহাট নৌ-রুট দিয়ে পার হয়ে ওইসব অঞ্চলের মানুষগুলো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এদিকে মানিকগঞ্জ পুলিশ-প্রশাসন কঠোরভাবে করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে। এ কারণে পণ্যবাহী ট্রাক, রিকশা, ভ্যানে করে ভেঙে ভেঙে কিছু দূর গিয়ে থামছেন, আবার রওনা হচ্ছেন।
এসময় ১০ কিলোমিটার পথ যাবার জন্য তাদেরকে জনপ্রতি একশত টাকা দিতে হচ্ছে।
আব্দুল সালাম নামের একজন পোশাক-শ্রমিক কালের কণ্ঠকে জানান, আগামীকাল থেকে গার্মেন্ট খোলা। এ কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছি। কিছু করার নেই, চাকরি চলে গেলে পরিবারকে নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে, তাই যাচ্ছি।
ফারুক নামের একজন জানান, আমরা কি মানুষ না ভাই! একদিকে গণপরিবহন বন্ধ করে রাখা হয়েছে, আবার আমাদের কারখানাও খোলা থাকবে! তাহলে আমরা কি করবো এখন? আমাদের অফিসও বন্ধ রাখতে পারতো। তাহলে এ দুর্ভোগে পরতে হতো না।
বিআইডাব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম, মো. জিল্লুর রহমান জানান, গণপরিবহন চলাচল নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে এ নৌ-রুট দিয়ে শুধু জরুরি কাঁচামালবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্স পারাপার হচ্ছে। ঘাট দিয়ে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে জোর করে ফেরিতে উঠছেন। শত শত যাত্রীদের আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। এ রুটে ১৫টি ফেরির মধ্যে সীমিত আকারে চারটি ফেরি চলাচল করছে।
মানিকগঞ্জ পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জের অংশের মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগামীকাল থেকে পোশাক কারখানা খোলার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কর্মমুখী লোকজন ফেরি পার হয়ে ঢাকার দিকে ফিরছে। এখন শত শত মানুষকে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। যেসব এলাকা থেকে এসব লোকজন আসছে সেখান থেকে থামাতে পারলে এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না।

image_pdfimage_print