
রোজা শুরু হতে আর মাত্র ২ মাস বাকি। ইফতার ও সাহরির আয়োজনকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেল তেল সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়িয়েছেন। ছোট-বড় দানা ভেদে কেজিতে মশুর ডালের দাম বেড়েছে ৩-৪/৫-৬ টাকা। প্যাকেট আটা-ময়দার দামও কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ার এসব চিত্র। একইভাবে আলু, পেঁয়াজ, ডিম ও মাছের দামও আগের মতো চড়া। তবে গত বুধ-বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ (শুক্রবার) মাঝারি চাল কেজিপ্রতি বেড়েছে ২ টাকা। যা দুইদিন আগে বিক্রি হতো ৫৬ টাকায়, তা আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ টাকা।
খুচরা বাজারে গত দুইদিন ধরে বেড়েছে তেলের দাম। বোতলজাত প্রতি লিটার তেলের দাম বেড়েছে ৫-৮ টাকা। আর খোলা সয়াবিনের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। পাম অয়েলের দামও ৫-১০ টাকা বাড়তি।
খুচরা বাজার ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে, বাজারে আসা নতুন এক লিটার তেলের বোতলে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫-১৬৮ টাকা, যা আগে ছিল ১৬০ টাকা। আর পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম এখন ৭৮৫-৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা।
এদিকে খোলা সয়াবিন লিটারপ্রতি ১৫৫-১৬০ টাকা বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা । যা আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা। পাম অয়েলের ১৩০-১৩৫ টাকার পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ১৯ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন, আগামী ১৫ দিন ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির পর ভোজ্যতেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরপরই ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমাদের না জানিয়ে ব্যবসায়ীরা নিজেরা কিছু দাম বাড়িয়েছিল। সেটাও তারা (ব্যবসায়ী) বলেছে বিবেচনা করবে। তবে আন্তর্জাতিক বাজার, ডিউটি স্ট্রাকচারসহ সব দেখে ১৫ দিন পর বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। সামনে রমজান ও রোজার ঈদ। সেজন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি, তারা যেন স্বাভাবিকভাবে এলসি ওপেন করে।’
তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে নতুন দাম কার্যকরের দাবি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। পরে সেটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ট্যারিফ কমিশনে পাঠায় মন্ত্রণালয়।
এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো দাম বাড়লেও ব্রয়লার মুরগির ও পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি দাম কমেছে কেজিতে ৫-১০ টাকার মতো। ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০-১৭৫ টাকা। আর পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৪০-২৮০ টাকা।
ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা। আলুর কেজি এখন ১৫ টাকা। ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ডিম।
সবজির বাজারে গাজর ও পাকা টমেটো কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। শিম কেজিপ্রতি ৩০-৬০ টাকা। শালগমের (ওল কপি) কেজি ৪০ টাকা। বরবটির কেজি ৭০ টাকা। ফুলকপির পিস ৪০ টাকা ও লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা ও পালং শাকের আঁটিও ১৫ টাকা।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকায়। অন্য মাছের মধ্যে কেজিপ্রতি নলা ১৭০-২০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস ১৫০-১৭০ টাকা। রুই ও কাতল ৩০০-৪৫০ টাকা। শিং ও টাকি ২৫০-৩৫০ টাকা। চিংড়ি ৬০০-৬৫০ টাকা। আর এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকায়। ছোট ইলিশ মাছের কেজি ৫০০-৬০০ টাকা।