
টাইগারদের আত্মবিশ্বাসটা জন্মে গত জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদেরকে টেস্টে হারানোর পর। সেই ম্যাচে অভিজ্ঞদের মধ্যে মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হক ছাড়া দলে আর কেউ ছিল না। এমন জয়ে বিদেশের মাটিতে যেকোনো দলকে হারানো সম্ভব- এ আত্মবিশ্বাস গাঢ় হয়। এবার যেন সেটির প্রতিফলন ঘটালো তামিম ইকবালের দল।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) সেঞ্চুরিয়ানে প্রথম ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের মধ্য দিয়ে নতুন ইতিহাস রচিত হলো। প্রথমবারের মতো প্রোটিয়াদের তাদেরই মাটিতে হারালো টাইগাররা। সিরিজেও ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। তবে এমন জয়ের পর আবারও আলোচনায় সাকিব আল হাসান।
মানসিক আর শারীরিক অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতেই চাননি টাইগার এই তারকা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ নাকি তিনি মোটেও উপভোগ করতে পারেননি। নিজেকে প্যাসেঞ্জারের সিটে মনে হয়েছে সাকিবের। কয়েকদিন আগে দুবাইতে একটি বিজ্ঞাপনের কাজে যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে মিডিয়ার সামনে এমনটাই বলেছিলেন সাকিব। তারপর বিসিবি সভাপতির সাথে আলোচনার পর বিমান ধরেছেন তিনি। আর সেই সফরের প্রথম ওয়ানডেতেই সাকিবের ভাগ্য সুপ্রশন্ন। তিন নাম্বারে নেমে চাপে থাকা দলকে টেনে তুলতে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন মিস্টার অলরাউন্ডার।
শুক্রবার সেঞ্চুরিয়ানে সাকিব যেন খেললেন এবং জয় করলেন। তার ব্যাটই ছিল সবচেয়ে বেশি সরব। তামিম-লিটন ৯৫ রানের জুটি গড়ার পর মাঠে নেমে সাকিব খেললেন ৭৭ রানের অনবদ্য ইনিংস। কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি কিংবা মার্কো জানসেনদের বল মোকাবেলা করে ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কা মারেন তিনি।
ইয়াসির আলির সঙ্গে সাকিব গড়েন ১১৫ রানের জুটি। এই জুটিটিই বড় স্কোর গড়তে সাহায্য করেছে বাংলাদেশকে। সাকিবের এমন অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ালো ৩১৪ রানে।
বল হাতে সাফল্য পাননি সাকিব। ১০ ওভার পুরো বল করে ৫৪ রান দিয়েছেন। তবে, তাসকিন, শরিফুল আর মিরাজরা বোলিংয়ের এই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছেন। দুর্দান্ত এক জয় উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশকে।
কিন্তু নিজেকে প্যাসেঞ্জার মনে হওয়া সাকিব যখন ড্রাইভিং সিটে বসে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে ফেলেন, তখন তাকেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার না দিয়ে উপায় থাকে না। তিনিই হলেন ম্যাচ সেরা।
বি. পরিক্রমা/ বোরহান উদ্দিন