
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম দলের নেতাকর্মীদের নির্লোভ, নিষ্ঠাবান রাজনীতিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে আদর্শ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন দলটির প্রেসিডিয়াম মেম্বার প্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের উদাহরণ।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, সাহারা খাতুন ছিলেন সৎ ও আদর্শবান নেতা। তার মতো নেতা এখন খুব প্রয়োজন। বর্তমানের মিথ্যার রাজনীতির সময়ে তার মতো নির্লোভ, নিষ্ঠাবান নেতার খুব দরকার ছিল। তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবকের মতো।
উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠে রোববার (৩১ জুলাই) ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাহারা খাতুনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মোহাম্মদ হাবিব হাসান। প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
সাহারা খাতুনকে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতা উল্লেখ করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, তিনি একবারে নয়, ধাপে ধাপে রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে এসেছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি মানুষকে ভালোবেসেছেন, মানুষের পাশে থেকেছেন।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ধারার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম মেম্বার বলেন, এখনকার রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখা যায়, সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক হইতে হইব। কিন্তু সাহারা খাতুন কখনো এমন মন-মানসিকতার ছিলেন না।

সাহারা খাতুনের রাজনৈতিক জীবনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, জিয়ার (জিয়াউর রহমান) সময়ে, এরশাদের সময়ে (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) যখন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মামলা-হামলা, জেল-জুলুমের শিকার হতেন, তখন সাহারা খাতুন তাদের খোঁজখবর নিতেন। নিজের অর্থে জেলহাজতে তাদের খাবার পৌঁছে দিতেন। এরপর সকল খোঁজখবর নিয়ে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করতেন। এমন নেতা এখন পাওয়া যায় না। এখন নেতারা জিজ্ঞেস করেন, ‘আগে কন কই লইয়া আইছেন, তারপর কথা কন। আমি ব্যবসা করি তো, আমার এইটা ব্যবসা।’ অন্যদিকে সাহারা আপা বলতেন, ‘এটা আমার কর্তব্য।’
আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর মামলা সাহারা খাতুন কোনো অর্থ ছাড়াই লড়েছেন জানিয়ে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বরং সারাদিন তিনি যে উপার্জন করতেন তা থেকেও কর্মীদের সহযোগিতা করতেন। বলতেন, ‘বাসায় যাওয়ার ভাড়া আছে? খাইছ?’
স্মরণসভায় সবাইকে সাহারা খাতুনের মতো হওয়ার শপথ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা সবাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করছেন। আগামী নির্বাচনে আমরা যেন আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত করতে পারি সেই শপথ নিন আজ এই স্মরণসভায়।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এস এম মাহবুব আলম, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম তোফাজ্জল হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আফসার উদ্দিন খানসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।