
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেছেন, অনেক কথাই বলেছেন। সামনে পিঠের ছাল কাদের থাকবে না, কারা দেশ ছেড়ে ঘটি-বাটি নিয়ে পালিয়ে যাবে সময় হলে টের পাবেন। খেলা তো এখনো দেখেন নাই। এখন তো পোলাপান রাস্তায়। কয়দিন পরেই বুঝতে পারবেন ঠেলা কারে বলে। এ সময় তিনি বিএনপিকে ষড়যন্ত্র ও বাড়াবাড়ি না করতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকালে রাজধানী উন্নয়ন করপোরেশন (রাজউক) মিলনায়তনে শোক দিবসের আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা।
আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জীবন বীমা করপোরেশন কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিয়াজি।
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার সঙ্গে সরাসরি জিয়া ও তার পরিবার জড়িত মন্তব্য করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, সে সময় জিয়া ছিল উপ-সেনাপ্রধান। তার কথা ছাড়া, তার নির্দেশ ছাড়া মোশতাকের পক্ষে এই খুন করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, এই খুনিরা এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশের স্বাধীনতা চায় নাই, মানে নাই। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে তারা কাজ করেছে। শুরু থেকেই তাদের অন্তরে ছিল পাকিস্তান আর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র। এজন্য তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর রক্ত, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কোনো শক্তি যাতে বেঁচে না থাকে এজন্য একই কায়দা ৩ নভেম্বর কারা অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে এই খুনি জিয়া, মোশতাকরা।
আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম মেম্বার বলেন, খুনিরা প্রথমে বঙ্গবন্ধুর রক্তে আঘাত করেছে। তার পরিবারের লোকজনকে হত্যা করেছে। তাদের ধারণা ছিল, বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধারা নিশ্চিহ্ন করতে পারলে এদেশকে তারা পাকিস্তানি ভাবধারায় গড়ে তুলতে পারবে।
তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না, বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বাস করে না, এদেশের উন্নয়ন বিশ্বাস করে না, কথায় কথায় যারা পাকিস্তানি ভাবধারা তুলে ধরে, তারা সবাই একই সূত্রে গাঁথা। এই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, জামায়াত-শিবির-আল শামস সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি, পাকিস্তানিদের সেই প্রেতাত্মারা এখনো সক্রিয়। ‘৭৫-এর কায়দায় বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যাচেষ্টা করেছে খালেদা জিয়া ও তার কুলাঙ্গার পুত্র তারেক রহমান। একই রক্ত, একই ধারা, একই চেতনায় জিয়া পরিবার যেমন বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছে, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা, উন্নয়নের রূপকার, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বারবার তারা হত্যার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছে।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া আরো বলেন, এই খুনি পরিবার যতদিন পর্যন্ত তাদের মনের খায়েশ পূর্ণ না হবে, ততদিন পর্যন্ত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাবে। এসময় ‘এই পরিবারের বিষয়ে’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
কারণ হিসেবে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, এরা নির্বাচন মানে না। এরা নির্বাচন কমিশন মানে না। এরা ইভিএম মানে না। এরা জোরজবরদস্তি ক্ষমতায় আসতে চায়।
তিনি বলেন, এখন আর সেই শক্তি নেই। ভুয়া ভোটার বানিয়ে ক্ষমতায় আসার দিন শেষ। এখন শেখ হাসিনার স্লোগান – আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। ২০২৩ সালের নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় আসবেন বলেও দাবি করেন তিনি।
দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম মেম্বার বলেন, সজাগ থাকতে হবে, যাতে কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান পলাশের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দলটির উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য সহিদুল ইসলাম মিলন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ড. এম এ সালাম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য ড. মো. আবু তাহের প্রমুখ।