Home জাতীয় এফবিসিসিআই হতে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ২৬ কর্মকর্তা কর্মচারীকে চাকুরিতে পুনঃবহাল ও...

এফবিসিসিআই হতে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ২৬ কর্মকর্তা কর্মচারীকে চাকুরিতে পুনঃবহাল ও বকেয়া পাওনাদি পরিশোধসংক্রান্ত আবেদন তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়ে বাণিজ্য সচিব, মহাপরিচালক ও এফবিসিসিআই সভাপতির প্রতি হাইকোর্টের রুল “”

36
0
SHARE

দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই হতে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ২৬ কর্মকর্তা কর্মচারীকে চাকুরিতে পুনঃবহাল ও তাদের বকেয়া বেতনভাতাদিসহ সমুদয় পাওনা পরিশোধের আবেদন আদেশ প্রাপ্তির তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বাণিজ্য সংগঠনসমূহের মহাপরিচালক ও এফবিসিসিআই সভাপতির প্রতি হাইকোর্ট চার সপ্তাহের রুল ইস্যু করেছেন।

গত ২৮ আগষ্ট বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মোঃ আখতারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের এক ডিভিশন বেঞ্চ এফবিসিসিআই এর সাবেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা (যুগ্মসচিবঃ সদস্যপদ ও আইনবিষয়ক) মোঃ রফিকুল ইসলাম ও অন্যান্য ২৫ কর্মকর্তা কর্মচারীর দায়ের করা এক রিট পিটিশনের শুনানি শেষে এ আদেশ প্রদান করেন। রিট পিটিশন নং-৯৩২৮/২০২২।

বাদী পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের আইনজীবী ব্যারিষ্টার এস এম আতিকুর রহমান। তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট মোঃ মুসফেকুস সালেহীন ও এড. সানজিদা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নী জেনারেল নওরোজ মোঃ রাসেল চৌধুরী, সহকারী এটর্নী জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল, মাসুদ রানা মোহাম্মদ হাফিজ ও তামান্না ফেরদৌস।

উল্লেখ্য, ভূক্তভোগী কর্মকর্তা কর্মচারীরা ২০২১ সালের ১২ জুন তারিখে প্রথম এবং সর্বশেষ ২১ আগষ্ট ২০২২ তারিখে বিবাদীদের নিকট প্রতিকার প্রার্থনা করে লিখিত আবেদন করেন। তবে তাদের আবেদনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠনসমূহ (ডিজি) এবং এফবিসিসিআই সভাপতি কোন কর্ণপাত করেননি। তাদের চাকুরিতে পুনঃবহাল এবং প্রাপ্য বেতনভাতাদি পরিশোধের কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি।

দাখিলকৃত আবেদন হতে জানা যায় যে, চাকরিতে পুনর্বহাল ও বকেয়া পাওনাদির দাবিতে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (এফবিসিসিআই)-কে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন সংগঠনটির সাবেক ২৬ জন কর্মকর্তা কর্মচারী।

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী ইমাম হাছান এবং ০৬ মার্চ ২০২২ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী ব্যারিষ্টার এস. এম আতিকুর রহমানের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বাণিজ্য সংগঠনসমূহের মহাপরিচালক এবং এফবিসিসিআই-এর সভাপতি ও মহাসচিব বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবরে এফবিসিসিআই থেকে ৬২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসঙ্গে পদত্যাগ করানো হয়। তাদের দাবি তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের চাপে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।

 

 

নোটিশে আইনজীবীরা বলেছেন, তাদের মক্কেলরা এতদিনেও জানেন না যে, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কিনা। এ বিষয়ে কোনো চিঠি ইস্যু হয়নি। ফলে এই পদত্যাগপত্র অবৈধ, বে-আইনি ও অকার্যকর। নোটিশ পাওয়ার দশ দিনের মধ্যে এসব কর্মীকে নিজ নিজ পদে পুর্নবহাল এবং চাকরিতে যোগদানের জন্য লিখিতভাবে জানানো ও বকেয়াসহ নিয়মিত বেতনভাতাদি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। আরো জানা যায় যে, তৎকালীন এফবিসিসিআই সভাপতি করোনা মহামারির দোহাই দিয়ে এফবিসিসিআই- এর ৬২ কর্মকর্তা কর্মচারীকে একই দিনে গণপদত্যাগে বাধ্য করেন। তন্মধ্যে কয়েকজনকে প্রাপ্ত বেতন ভাতাদির মাত্র ২০ ভাগ পরিশোধ করা হয় এবং অনেককে প্রভিডেন্ট ফান্ডের নামমাত্র অর্থ ছাড়া সার্ভিস বেনিফিটের কোন অর্থই প্রদান করা হয়নি। কর্তৃপক্ষের করোনাকালীন দু:সহ পরিস্থিতিতে চরম অবহেলা, চাকুরিচ্যুতি ও বেতনভাতাদি না পাওয়ায় মানসিক যন্ত্রণায় শেষ পর্যন্ত কর্মকর্তা এ এফ আইনুল হুদা ও কর্মচারী আব্দুল বারেক হার্ট এ্যটাকে মৃত্যুবরণ করেন। রীটের আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন এফবিসিসিআই-এর কর্মকর্তাদের মধ্যে- মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ সাইফুল ইকবাল, মোঃ হারুন আর রশিদ, শাহ্ মোঃ মাকসুদুল হক, মোঃ তাহেরুল ইসলাম রুবেল, মোঃ হুমায়ন কবির, সাবিনা ইয়াসমিন, মোঃ মনিরুজ্জামান, জাকির হোসেন সরকার, চৌধুরী কামরুল হাসান, লিপিকা রাণী হালদার, মোঃ রফিকুল ইসলাম; স্টাফদের মধ্যে আছেন- রিটা রায় (টেলিফোন অপারেটর), মোঃ আব্দুল জব্বার (সিনিয়র সহকারী), মোঃ রফিকুল ইসলাম (কম্পিউটার অপারেটর), বেনজিন আরা বেগম (সিনিয়র সহকারী), তানিয়া ভূঁইয়া (সিনিয়র সহকারী), ওমর আলী (সিনিয়র সহকারী), আবদুল আওয়াল (জুনিয়র সহকারী), মাহবুব হোসেন (মেসেঞ্জার), স্বপন উর রহমান (লিফটম্যান), মিজানুর রহমান (ড্রাইভার), আলী আকবর (ড্রাইভার), ফজলুল হক (ড্রাইভার), কামরুজ্জামান খান (সিনিয়র সহকারী) এবং পেশ ইমাম হাফেজ ক্বারী মাওলানা মোস্তফা কামাল; প্রমূখ।

image_pdfimage_print