
ঢাকা-৫ আসন আ.লীগের টিকেট পেতে যাচ্ছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। এমনই আলোচনা চলছে ওই এলাকার মানুষের মুখে মুখে।
একটি সূত্র জানিয়েছে আগামী নির্বাচনে ঢাকা – ৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার জন্যই কামরুল হাসান রিপনকে ধনিয়া কলেজের গভর্নিং বোর্ডের সভাপতি হিসিবে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। যাতে ওই এলাকার মানুষের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। এতে নির্বাচনে সহজেই জয় পাবেন তিনি।
জানা যায়, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন এক ডজনের উপরে নেতা। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেট পেতে ডেমরা, যাত্রাবাড়ী ও কদমতলীর থানা পর্যায়ের অনেক নেতা ও তাদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের ক্লিন ইমেজ প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তবে এদের কারও কারও বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।
বর্তমান এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু দলিল লেখকে মারধর, যাত্রাবাড়ী আইডিয়েল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতিকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য, নিজের পিএসের দলীয় পরিচয়সহ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছেন। এবার নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন থেকে ছিটকে যেতে পারেন মনু এমনই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে ।
এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রাথমিকভাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না, ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম খান মাসুদ, এশিয়ান টিভির চেয়াম্যান হারুনুর রশিদ, সাবেক সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্যা’র ছেলে ও ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল, বাংলাদেশ আ.লীগের আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য নেহরীন মোস্তফা দিশি।
তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার বিচারে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। তিনি পরিছন্ন ও ক্লিন ইমেজ রাজনীতিবিদ হিসেবেই পরিচিত।
নব্বইয়ের দশকে রাজনীতির উত্তান কামরুল হাসান রিপনের। ১৯৯২ সালে দনিয়া কলেজের ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক, ১৯৯৫-৯৮ পর্যন্ত জবি হিসাব বিজ্ঞান শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক, ১৯৯৮-২০০৩ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক, ২০০৩-২০১০ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন এবং কাউন্সিলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনেও দীর্ঘদিন থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ হিসাব বিজ্ঞান সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একাউন্টটিং এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় কামরুল হাসান রিপন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। জানা যায়, ওই সময় রিপনের নেতৃত্বেই ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হয় ছাত্র শিবির। তার নেতৃত্বে শিবিরের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মূহুর্মূহু সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষগুলোতে ছত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিজের শরীরের রক্তও ঝড়িয়েছিলেন রিপন। নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান। তখন রিপন সারাদেশে ‘শিবির নিধন রিপন’ হিসেবে বেশি পরিচিতি লাভ করেন।
ওয়ান ইলেভেনের লড়াই সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে চার-পাঁচ বার জেল খাটা ও প্রায় ২৫ টি মামলা খেতে হয়েছে। বর্তমানে তরুনদের কাছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের আইকন হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করেছেন কামরুল হাসান রিপন।
রিপন দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছেন। জনগণের খোঁজ-খবরও নিয়মিত রাখেন। বর্তমানে মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন রিপন। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে নিয়মিত সাধারন মানুষের মাঝে ত্রাণ ও রোজাদারদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বেইে পিছিয়ে পড়া ডেমরা থানা আওয়ামীলীগের কার্যক্রম অনেকটা গতিশীলতা পেয়েছে। তিনি জনপ্রতিনিধি না হয়েও ডেমরা-যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী তথা ঢাকা-৫ আসনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নানান ভাবে সম্পৃক্ত রয়েছেন।
কদমতলীর বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রিপন ভাই বিচক্ষণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তার মত উচ্চ শিক্ষিত কোন ভালো প্রার্থী নাই। তার রাজনীতি সহজ সরল, কোন ধরনের কুটিলতা নেই। তাকে আমরা ঢাকা-৫ আসনের লোকজন খুবই ভালোবাসি। আসা করি এ উপ-নির্বাচনে রিপন ভাই আওয়ামীলীগের টিকেট পেয়ে নির্বাচিত হবেন।
শিক্ষাবিস্তারে অগ্রগামী ও দলীয় ক্লিন ইমেজের কারণে কামরুল হাসান রিপনের পক্ষেই নির্বাচনে মনোনয়নের বইঠা থাকবে বলে জানিয়েছে আওয়ামীলীগের একটি প্রভাবশালীমহল।
এ বিষয়ে কামরুল হাসান রিপন বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেলে ইনশাআল্লাহ আমি বিজয়ী হবো। কারন ছোট বেলা থেকে এ এলাকায় বড় হয়েছি। সুখে-দুঃখে সব সময় এলাকার মানুষের সাথে রয়েছি। নির্বাচিত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ঢাকা-০৫ আসনকে আ.লীগের দূর্গ হিসেবে পরিনত করার জন্য নিরলস কাজ করে যাবো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারন করে সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবো।