Home সারা বাংলা মেজর জেনারেল এম. শামসুল হকের পরিবার মতলবের শিক্ষা ও বেকারত্ব দূরীকরণে ...

মেজর জেনারেল এম. শামসুল হকের পরিবার মতলবের শিক্ষা ও বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখছে

51
0
SHARE

মতলব উত্তর প্রতিনিধি :
বৃহত্তর কুমিল্লার প্রথম মেজর জেনারেল মেজর জেনারেল (অব.) এম শামসুল হক ছিলেন মতলব উত্তর
উপজেলার কৃতি সন্তান। তিনি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম
সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী। তিনি ১৯৩১ সালের ১ সেপ্টেম্বর মতলব উত্তর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেন। বৃহত্তর মতলবের উন্নয়নে তাঁর পরিবারের অবদান অনস্বীকার্য। যুবকদের কাছে
অনুস্বরণীয় হয়ে উঠেছে এ পরিবার।
এম শামসুল হক ১৯৫৬ সালে এমবিবিএস পাস করে একই সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
১৯৭১ সালে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের ইস্ট পাকিস্তান এয়ারফোর্স ব্যাজে কর্মরত ছিলেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ উপস্থিত থেকে শোনার পর
তিনি অনুপ্রাণিত ও প্রত্যয়ী হয়ে উঠেন। ২৬ মার্চের পর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে চলে যান
গ্রামের বাড়িতে। এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাতের অন্ধকারে আগরতলা যান। সেখানে
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে জেনারেল
ওসমানী সেনাবাহিনীর জন্য পৃথক মেডিকেল কোর সংগঠিত করতে স্কোয়ার্ডন লিডার এম
শামসুল হককে দায়িত্ব দেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ডিজিএমএস নিযুক্ত হন। একাত্তরের
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেছিলেন।
শামসুল হক ছিলেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল কোরের প্রথম মহাপরিচালক। ১৯৭১
সালের নভেম্ব^র মাসে তাঁকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৮২ সালের ২৬ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ
মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি নিয়োগ পান। বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প বিকাশের জন্যে
যুগান্তকারী পদক্ষেপ ড্রাগ অর্ডিন্যান্স অ্যাক্ট ১৯৮২ প্রণয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
অনস্বীকার্য।
বিজয় অর্জিত হওয়ার পর তিনি ২২ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ৫ এপ্রিল ১৯৮২ সাল
পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর ডিজিএমএস-এর দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮২ সালের মার্চ মাস থেকে
ডিসেম্বর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর বিভিন্ন সময়ে তিনি স্বাস্থ্য, পরিকল্পনা,
সমাজকল্যাণ, বাণিজ্য, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর কাজের
স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা সেনানিবাসের আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (এএফএমসি)
অডিটোরিয়ামের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘মেজর জেনারেল এম শামসুল হক
অডিটোরিয়াম’।
২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর এই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করেন। আর এর মধ্য দিয়ে মতলবের কৃতি সন্তান
শামসুল হকের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের অবসান ঘটে। তিনি দুই ছেলে ও দুই
মেয়ের জনক। তাঁর বড় ছেলে জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস্ধসঢ়;-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো.
মমিনুল হক ও ছোট ছেলে শিল্পপতি মো. আনিসুল হক।
বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ছোট ছেলে শিল্পপতি মো. আনিসুল হক মতলব উত্তর উপজেলায়
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থেকে এ অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যাপক
অবদান রাখছেন। তিনি শরীফ উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় এ- কলেজ গভর্ণিংবডির সভাপতির দায়িত্ব
পালন করছেন। ইতিমধ্যে আনিসুল হক এলাকায় একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে সুনাম
কুড়িয়েছেন।
বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে মোহনপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর চরাঞ্চলে ডেইরী খামার স্থাপন করেছেন। এ
খামারের মাধ্যমে চরাঞ্চলের অনেক যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস এ চাকরীর
ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
এছাড়াও এলাকাকে মাদকমুক্ত করার প্রত্যয়ে যুব-যুবতিদের সংঘবদ্ধ করে ‘মাদককে না বলুন-মাদক
থেকে দূরে থাকুন’ এ শ্লোগানে আত্মপ্রত্যয় সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে
থাকেন।
শিল্পপতি মো. আনিসুল হক বলেন, বাবার স্বপ্ন ছিলো সোনার মতলব গড়ার। বাবার সেই স্বপ্ন
পূরণের জন্য কাজ করছি। বাবা মানুষের কল্যাণে আজীবন কাজ করেছেন। তার স্বপ্ন পূরণে কাজ
করে যাচ্ছি। এই আশায় যে, মানুষের কল্যাণে কিছু একটা করতে পারলে বাবার আত্মা শান্তি
পাবে। আমার বাবা মতলবকে সোনার মতলব গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। মতলবের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে
কাজ করছেন আজীবন। মতলববাসীর কল্যাণের জন্য একটু ছোট কাজ করতে পারলে আমার বাবার
আত্মার শান্তি পায়।
ছবি-১ :
মেজর জেনারেল মেজর জেনারেল (অব.) এম শামসুল হকের পরিবার। ইনসাইডে তাঁর ছবি।

image_pdfimage_print