Home ক্যাম্পাস খবর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের অর্থায়ন জরুরি

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের অর্থায়ন জরুরি

108
0
SHARE

আবুল কাসেম হায়দার : শিক্ষা ও গবেষণায় দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ। বাংলাদেশ বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৫৪টি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১১২টি। আরও বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ পড়াশোনা করছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত বিষয়ে। অথচ এই বিষয় নিয়ে ভারতে পড়াশোনা করছে ৪০ শতাংশ, মালয়শিয়ায় পড়ছে ৪৪ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুরে অধ্যয়ন করছে ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী। এছাড়া দেশে মেডিকেল কলেজ সরকারিভাবে রয়েছে ৩৭টি, ছাত্রছাত্রী ১৫ হাজার ৪২২ জন। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে ৭২টি, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হচ্ছে ছয় হাজার ৭৭২।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বমানে অবস্থান : দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ১৬৬টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ভালো, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও বেশ ভালো। শিক্ষার মান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এ প্রশ্ন যেমন রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের প্রতি, তেমনি মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ সম্পর্কে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারী ২০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকা দরকার। কিন্তু আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এই মানদণ্ড মানতে পারছে না, হোক সেটি সরকারি অথবা বেসরকারি। উভয় মহলের দৃষ্টি সেদিকে তেমন দেয়ার সুযোগ থাকছে না।

বর্তমান বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফলাফলভিত্তিক শিক্ষা এবং ছাত্রকেন্দ্রিক শেখার মডেলগুলো শিক্ষাদান ও শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রবর্তন করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচশ’র মধ্যে স্থান পায়নি। সেপস-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েব ম্যাট্রিকের র‌্যাংকিং শীষর্ক এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রয়োজন: শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রথমে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, ভালো শিক্ষক, পাঠাগার ও গবেষণাগার দরকার। প্রয়োজন পাঠদানের আধুনিক ব্যবস্থা। উন্নত কোর্স-কারিকুলাম, আর সবচেয়ে বড় প্রয়োজন উপযুক্ত ছাত্রছাত্রী। এখন সব ধরনের ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুুদ্ধে লেগে যায়। ভর্তি হচ্ছে, কিন্তু উচ্চশিক্ষা সব ছাত্রছাত্রীর জন্য প্রয়োজন নয়। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। কে কে উচ্চশিক্ষা নিতে পারবে, বা কার কার উচ্চশিক্ষা প্রয়োজন, তা ঠিক হয়ে যাবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার আলোকে।

কিন্তু আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিকল্পনা, তা বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি আর্থিক দৈন্যের জন্য মানসম্মত শিক্ষা দিতে পারছে না। এ কথা শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অভাব নেই। সেখানে রয়েছে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ঘাটতি। অন্যদিকে রয়েছে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয় নীতি। এসব কারণে অর্থ থাকলেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষার মানের উন্নতি হচ্ছে না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে হরেক রকমের সমস্যা রয়েছে। প্রথম সমস্যা ব্যবস্থাপনা, চিন্তার ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর। দ্বিতীয় অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তারা ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরিতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু ২০১০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় একটি অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেহেতু লাভের আশায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনেক উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন নিয়ে নিজ খরচে প্রতিষ্ঠান করেছেন, তাই ২০১০ আইন হওয়ার পর বড় সমস্যায় পড়ে যান। অনেকে অনৈতিক আচরণের চরিত্রে দীক্ষিত হন। অনেকে অন্যায় করতে থাকেন। আবার অনেক উদ্যোক্তা অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মানে উন্নত করতে পারেননি, কষ্ট করে যেমনতেমনভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের পক্ষে মানসম্মত শিক্ষা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এক দেশে দুই আইন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব অর্থ দিচ্ছে সরকার। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার আয় ব্যয় ছাত্রছাত্রীদের টিউশন ফি থেকে। সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পয়সাও দেয় না, বরং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার নিয়মিতভাবে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ করছে। তার বিনিময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছুই পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম অচল, শিক্ষার মান কোনোভাবে ধরে রাখতে পারছে না।

বেসরকারি আইন ২০১০ অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় পর ওই বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব জমি ক্রয় করে এবং অবকাঠামো নিজ খরচে করে স্থানান্তর করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরূপ একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কোটি কোটি টাকার দরকার। শুধু ছাত্রছাত্রীদের টিউশন ফি থেকে এই অর্থের জোগান সম্ভব নয়। তাই অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারছে না। অনেকে ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে সরকার নীরব। কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা সরকার করছে না। অন্যদিকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার দিচ্ছে। কিন্তু তাদেরও মান তলানিতে। সরকারের এই দ্বৈত নীতির ফলে উচ্চশিক্ষা নানা সমস্যায় জড়িত।

উপায় কী

১. উচ্চশিক্ষাকে মানসম্পন্ন করতে হলে প্রথমে সরকারকে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে সমান নীতিতে দেখতে হবে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো, গবেষণা, শিক্ষক মান উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। একটি নতুন নীতিমালার মাধ্যমে এই নিয়ম চালু করা যেতে পারে।

২. দ্বিতীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে কিছু সংশোধন আনতে হবে। বর্তমান আইনে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লাভজনক নয়। কোনো লভ্যাংশ কোনো উদ্যোক্তা নিতে পারবেন না। তাতে হচ্ছে অনিয়ম। এক্ষেত্রে আইন সংযোজন করতে হবে যে, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লাভজনক প্রতিষ্ঠান হলে লভ্যাংশও উদ্যোক্তা নিতে পারবেন। তখন উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামোসহ নানা উন্নয়ন ঘটবে। আর একটি ধারা থাকবে বর্তমানে যা রয়েছে। যেসব উদ্যোক্তা তার বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনকভাবে চালাবেন তাও অনুমোদনে থাকবে। তখন তিনি লাভ নেবেন না। তাই শুরু থেকে সে অনুযায়ী পরিচালনা ও অর্থায়ন করবেন। তখন তা হবে একান্ত দান, অনুদান; লাভের আশায় নয়। আমাদের দেশে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা এখনও লাভে পরিচালিত হচ্ছে। উদ্যোক্তারা ওই প্রতিষ্ঠান থেকে লাভ নিতে পারেন। আবার অনেক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার উদ্যোক্তারা কোনো লাভ নেন না। তা সদকায়ে জারিয়ার নিয়মে পরিচালনা করেন। তবে কেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এই নিয়মে দেবে না, এই নিয়ম করা হলে দুর্নীতি ও অনিয়ম অনেক দূর হয়ে যাবে।

এখন যেহেতু অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোক্তারা লাভের আশায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন, তাই তারা আইনের কারণে অবৈধ পন্থায় ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ নেয়ার চেষ্টা করছে। এতে সরাসরি জেনে-শুনে অনিয়ম, অন্যায় ও দুর্নীতি হচ্ছে। যে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যয়, নীতি, আদর্শ, সততা ও দেশপ্রেম শিক্ষায় শিক্ষিত যুবসমাজ তৈরির কারখানা, সেই বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোক্তারা এই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থাকলে কীভাবে সৎ ও যোগ্য ছাত্রছাত্রী তৈরী করবে? এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান জাতির স্বার্থে প্রয়োজন।

৩. উন্নত মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রয়োজন উন্নত মানের শিক্ষক। আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে ভালো শিক্ষক তৈরির কোনো উদ্যোগ নেই। তাই তো উন্নত মানের শিক্ষক হচ্ছে না। তা ছাড়া যারা ভালো লেখাপড়া জানেন, তারা এখন উন্নত দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। উচ্চশিক্ষা নেয়ার পর তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন না। তাই দ্বিতীয় বা তৃতীয় মানের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষক হিসেবে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হচ্ছেন। এজন্য প্রয়োজন উচ্চ মানের বেতনকাঠামো। ওই আকর্ষণীয় বেতনকাঠামোর জন্য ভালো ভালো ছাত্রছাত্রী শিক্ষা গ্রহণ শেষে দেশে ফিরে এসে দেশের সেবা করবেন। তাতে শিক্ষার মান বাড়বে।

দ্বিতীয়ত, বেসরকারি ও সরকারি শিক্ষকদের জন্য একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা প্রয়োজন। যেমন প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষকদের জন্য সরকারি উদ্যোগে ট্রেনিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য অনুরূপ প্রতিষ্ঠান দ্রুত তৈরি করা প্রয়োজন।

৪. দেশে যে হারে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হচ্ছে, তা দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা ছাড়া হচ্ছে। এটি বন্ধ করা প্রয়োজন। কতটি কী ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় দেশে রয়েছে, তা দেখে প্রয়োজন ও ১০০ বছর ডেল্টা পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষার মানের প্রতি সরকারকে যতœশীল হতে হবে। চাকরির উদ্দেশ্যে উচ্চশিক্ষা নয়, উচ্চশিক্ষা হবে গবেষণার জন্য। দেশের মানুষের কল্যাণে গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাতি হিসেবে আমাদের গড়ার জন্য ২০৪১ সালের নাগাদ উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন করে দ্রুত সাজানো প্রয়োজন।

দেশে চার ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের ফিরে আসতে হবে, নতুবা জাতিকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা নিসয়ে আমাদের সমাজের শ্রেণিযুদ্ধ চালু রয়েছে। তার অবসান হওয়া দরকার।

৫. আন্তর্জাতিক শিক্ষাদান পদ্ধতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকতা ও শেখার আধুনিকরণ করা প্রয়োজন। গবেষণার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়া উচিত। সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম চালু করা প্রয়োজন। সরকারের জাতীয় বাজেটে এক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। শুধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে এক্ষেত্রে অর্থ দিলে চলবে না। জাতির অর্ধেকের চেয়ে বেশি শিক্ষক তাতে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাই জাতি উপকৃত হচ্ছে না।

৬. শিক্ষকদের জন্য পদোন্নতির নীতি জানা থাকা উচিত। সরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তা রয়েছে। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে, কিন্তু সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ঠিকমতো মানা হচ্ছে না। তাই অনেকে মানহীন শিক্ষক, অধ্যাপক ও সহ-অধ্যাপক হয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সততার স্বচ্ছতার পরিচয় দিতে হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা না থাকলে কখনও ভালো শিক্ষকমণ্ডলী ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠবে না। সে কারণে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মানও উন্নত হতে পারবে না।

কেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুণের মানের উন্নতি হয় না? সরকার তো শিক্ষকদের সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে না। গবেষণা করার জন্যও অর্থ দিচ্ছে না। কারণ বের করা প্রয়োজন। তা দূরীকরণে সরকারকে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। কেন বিশ্বের ৫০০ বা এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না, তা খুবই দুর্ভাগ্যের। প্রতিকার হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল শিক্ষা উন্নত হলে আমরা প্রচুর বিদেশি ছাত্রছাত্রী পাব। তাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুবিধা হবে। অন্যদিকে আমাদের দেশের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে সাধারণ অনার্স, মাস্টার্স করার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। শুধু উচ্চতর গবেষণার জন্য ছাত্রছাত্রীদের বিদেশ যাওয়া উচিত, যা জোর করে বন্ধ করা যাবে না। এজন্য প্রয়োজন আমাদের মানসম্মত শিক্ষার ব্যবস্থা করা। বিশ্বমানের শিক্ষা ছাড়া বিশ্ববাজারে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিযোগিতায় হারিয়ে যাবে। উন্নত জাতি গঠনে উন্নত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই উন্নত সরকার ছাড়া উন্নত শিক্ষাও দেয়া সম্ভব নয়। তাই সরকারকে ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্বার্থে শিক্ষা ব্যবস্থায় দ্বিমুখী নীতি পরিহার করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নীতি ও অর্থায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি আইএফআইএল, অস্ট্রেলিয়ান

ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও আবুল কাসেম হায়দার

মহিলা কলেজ, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম

aqhaider@youthgroupbd.com

image_pdfimage_print