
৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস, দিবসটিতে শিক্ষক সমাজের দায়িত্ব কর্তব্য ও অধিকারের বিষয়টি নিয়ে কথা বলার দিন। একজন শিক্ষক প্রথমতো দেশের একজন নাগরিক,দ্বিতীয়ত মানুষ গড়ার কারিগর এমন একটি পেশায় কর্মরত যেখানে তিনি মানষিক শ্রম দেন, সে বিবেচনায় শিক্ষকের দায়িত্ব কর্তব্য ও অধিকার কি হবে সেই আলোকেই ইউনেস্কো সুপারিশ করেছে। প্রতিবারের মতো এবারও দিবসটি পালিত হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে,তবে বাংলাদেশে দ্বিতীয় বারের মতো সরকারিভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। ইউনেস্কো প্রতিবারই দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য করেছে, ঠধষঁরহম ঃবধপযবৎ াড়রপবং:ঞড়ধিৎফং ধ হবি ংড়পরধষ পড়হঃৎধপঃ ভড়ৎ বফঁপধঃরড়হ” শিক্ষকের কণ্ঠস্বর: শিক্ষায় সামাজিক অঙ্গীকার। তবে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতত্যাগ এবং নতুন অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ শিক্ষকদের উপর নির্যাতন,আইনবহির্ভুতভাবে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা,স্বাধীন ও মুক্তমনা শিক্ষকদের নামে সাম্প্রদায়িক শক্তির ট্যাগ মেরে হেনস্থা করা, কোথাও মেরে ফেলার ঘটনা ঘটায় শিক্ষকের মান-সম্মান যেভাবে ধুলায় মিশেছে তাতে শিক্ষকের ক›ঠস্বর জোরালো থাকার কখা নয়,এমনতর বাস্তবতায়, বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে ইউনেস্কো প্রদত্ত প্রতিপাদ্য বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য মিল খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন। তবে এ পরিস্তিতির উন্নতি হবে বলে সবার প্রত্যাশা।
১৯৯৪ সালে ইউনেস্কোর ২৬ তম সাধারণ সভায় ৫ অক্টোবরকে বিশ^ শিক্ষক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়। দ্বিতীয় জন্মদাতা অথবা জাতি গড়ার কারিগর বলে বিবেচিত শিক্ষক সমাজের মান সম্মান ইজ্জ্বত ও আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা এবং তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কি ? সে বিষয়টি নিয়েই দিবসটি পালনের উদ্দ্যোগ। বিষয়টি কোন আইন নয়, একটি আন্তর্জাতিক সমঝোতা স্মারক। কোন রাষ্ট্র এটি পালন না করলে আনর্জাতিক সংস্থা তাকে বাধ্য করতে পারেনা তবে দেশের জনগণ এবং ভুক্তভোগীরা সেটা বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করার নৈতিক ও আইনগতভাবে কথা বলার অধিকারী হয়। শিক্ষার অধিকার মানবিক এবং মৌলিক, বিষয়টি বিবেচনায় এবং জাতিসংঘের ঘোষণা বাস্তবায়নে ১৯৬৬ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তঃসরকার সম্মেলনের সুপারিশ থেকে বিশ্বের সকল শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা, সকল রাষ্ট্রের উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন, মানব সম্পদের পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়ক কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেন জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেস্কো) মহাপরিচালক ও সম্মেলনের সভাপতি।
সম্মেলনে যোগদানকারি সরকার প্রধান বা তাদের প্রতিনিধিরা সেটাতে স্বাক্ষর করেন এবং বাস্তবায়নের অঙ্গিকার করেন। সম্মেলনে গৃহিত সুপারিশের মধ্যে প্রধান বিষয়গুলি ছিল শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মান নিশ্চিতকরণ,মাধ্যমিক স্তরে সবার জন্য স্তর নির্বিশেষে শ্রেণি বৈষম্যহীন একই শিক্ষা নীতিমালা, শিক্ষার উদ্দেশ্য, শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন, পদোন্নতি, পেশাগত আচরণ ভঙ্গের শাস্তি, নারী শিক্ষকদের জন্য কর্মপযোগী পরিবেশ, শিক্ষকদের অধিকার ও নিরাপত্তা এবং পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিধান এমনকি রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা ও একাডেমিক স্বাধীনতার অধিকার ঐ সম্মেলনে গৃহীত হয়েছিল। ১৯৪৮ সালের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের ২৬ ধারায় জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলিতে সবার জন্য প্রাইমারি ও ইলিমেন্টারী শিক্ষা (১৮ বছর বয়স পর্যন্ত) নিশ্চিত করবে, মাধ্যমিক স্তরে কারিগরি শিক্ষার বিস্তার ঘটাবে আর মেধারভিত্তিতে উচ্চ শিক্ষা সবার জন্য অর্থায়ন করবে সরকার। সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে (২০০০-২০১৫) মিলেনিয়াম ডেভোলপমেন্ট গোল এর ৮টি বিষয়ের মধ্যে ২নম্বরে সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সরকারি বেসরকারি ও এনজিও স্কুলের মাধ্যমে সংখ্যাগত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য এসডিজিস (২০১৫-২০৩০) এর ৪র্থ নম্বরে কোয়ালিটি, ইনক্লুসিভ ইক্যুইটি এবং লাইফলং এডুকেশন বাস্তবায়নে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কাজগুলি বাস্তবায়নে নিয়োজিত শিক্ষকদের দক্ষতা,আন্তরিকতা,সামাজিক মর্যাদা আর অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। কিন্তু এর কোনটিই এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি।
প্রাইমারি স্কুলের একজন শিক্ষকের চাকরি শুরু হয় ৯৭০০ টাকার স্কেলে ১৫০০০/= টাকায় আর মাধ্যমিক স্তরে ১২৫০০/ টাকার স্কেলে, ১০০০ টাকার মাসিক বাড়ি ভাড়া আর ৫০০/= টাকার চিকিৎসা সুবিধা দিয়ে ১১৭৫০/= টাকায় (১০ ভাগ কর্তনের পর) মাসিক বেতনে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উৎসব বোনাস পান মূলবেতনের ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ। বেতন থেকে কর্তনকৃত টাকা অবসরে যাওযার ৩/৪ বছরেও শিক্ষক-কর্মচারীরা পাননা। অবসরে যাওয়ার পর,আবেদন করার ৬ মাসের মধ্যে অবসর ও কল্যাণ তহবিলের টাকা পরিশোধের জন্য আদালত নির্দেশনা দিলেও সরকার আপিল করে শিক্ষকদের পাওনা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেক জায়গায় সংস্কারের কথা বললেও এখন পর্যন্ত এক্ষেত্রে কোন সংস্কারে আভাষ দেননি।
শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির মাধ্যমে হওয়ায় ভালো মানের শিক্ষক আসলেও প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারীদের এখনও নিয়োগকালে দলীয়করণ,স্বজনপ্রীতি উৎকোচের বিষয়টিও মুক্ত নয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষকদের পিটিয়ে হত্যা, হামলা, গলায় জুতার মালা পরানোর মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছিলো জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক কর্মী,গভর্নিবডির সদস্য দ¦ারা, এই সকল ঘটনার কোন বিচার না হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ঢালাওভাবে শিক্ষকদের উপর নির্যাতন, আইন বহির্ভুতভাবে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে-শিক্ষকরা মর্যাদাহানীর শেষ পর্যায়ে। ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সৃষ্ট মনস্তাত্তিক দুরত্ব, পাঠদান কাজের সংকটের বিষয়টি নতুন সমস্যা হিসেবে সামনে আসছে, এগুলি দুরিকরণে প্রয়োজন। বিশ্ব শিক্ষক দিবসের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে নীতি নির্ধারকদের যথেষ্ট আন্তরিকতা যেমন দরকার, সেইসাথে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করাও প্রয়োজন, সেটা বিবেচনা করেই সংস্থাটি প্রত্যেক দেশকে তাঁর দেশের জি.ডি.পির ৭% শিক্ষাখাতে ব্যয় করার তাগিদ দিয়েছিলো,যদিও তা কার্যকর হয়নি। ড. কুদরতই খুদার শিক্ষা কমিশন জি.ডি.পি’র ৫% পর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে ৭% এবং ১০ বছরের মধ্যে শিক্ষাকে সরকারিকরণের তাগিত দিয়েছিলো, সেটাও কার্যকর হয়নি।। ২০০৬ সালে সেনেগালের রাজধানী ডাকার-সম্মেলনে ইউনেস্কোভূক্ত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির শিক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে আর্থিক সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে আপাতত জি.ডি.পি’র ৬% ব্যয় করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও, তা কার্যকর হয়নি। ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে এসডিজি এর সম্মেলনে দ¦াদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার ব্যয় সরকার বহন করবে বলে সম্মতি দিয়েছিলো, সেটাও বাস্তবায়িত হয়নি। শিক্ষাখাতে বরাদ্দকৃত টাকার অংক কিছুটা বাড়লেও শতাংশে কমেছে। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে তার সুফল তেমন পাওয়া যায়নি। শিক্ষাখাতে জিডিপির ৭%, ৬% ও ৫% বরাদ্দে বিভিন্ন সরকারের প্রতিশ্রুতি থাকলেও সেখানে বরাদ্দ ২.৪% উপরে ৫৩ বছরে, কখনও উঠেনি বরং শিক্ষার সাথে বিজ্ঞানও প্রযুক্তি যুক্ত করা, প্রতিরক্ষাখাতের ক্যাডেট শিক্ষায় ব্যয় করা, প্রতি বছর বরাদ্দকৃত টাকার কিছু অংশ অব্যবহৃত থাকা এবং প্রকল্পের নামে অর্থের নয়-ছয় শিক্ষায় অর্থায়ন কমেছে। এসডিজি এর আলোকে ২০৩০ সালের মধ্যে (২০১৫-২০৩০) কোয়ালিটি ইক্যুইটি ইনক্লুসিভ এবং লাইফলং এডুকেশন এবং মাধ্যমিক স্তরে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা রাষ্ট্রীয় অর্থায়নের বাস্তবায়ন করতে হলে পরিকল্পনা কমিশনের হিসেব মোতে জিডিপির ৪.৪% টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করার পরেও শিক্ষা বাজেটে বরাদ্দ ছিলো জিডিপির ১.৬৭% (২০২৪/২০২৫)।
আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা ও সক্ষমতায় বাংলাদেশের কাছাকাছি এমনকি দূর্বল অনেক দেশও শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশী ব্যয় করছে। শিক্ষাখাতে ভুটান ৪.৮, মালদ্বীপ ১১.২০, ভারত ৩.১% আর বাংলাদেশের অবস্থান ১.৬৭% (২০২৪/২৫)। বাংলাদেশের শিক্ষা ও শিক্ষকদের অবস্থান বিশ্বায়নের বিবেচনায় দুঃখজনকই নয় লজ্জাজনকও। দেশের ৯০% শিক্ষা এখনও পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার মাধ্যমে। বাকী ১০% সরকারি এবং প্রাইভেট শিক্ষার মাধ্যমে। সারা চাকুরী জীবনে দুইবার পদোন্নতি, প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক হওয়ার সেই কলংক এখনও শেষ হয়নি। পারফরমেন্সভিত্তিক পদোন্নতির ব্যবস্থা নেই,সময়ভিত্তিক পদোন্নতি এবং সারা চাকুরি জীবনে দুটির বেশী পদোন্নতি নেই, ফলে এ পেশায় মেধাবীদের অংশ গ্রহণ যেমন কম তেমনি পেশাগত মান বৃদ্ধির চেষ্টাও কম, ফলে কোয়ালিটি শিক্ষা বাস্তবায়নের পরিবেশ তৈরি হচ্ছেনা। একই কাজের জন্য ভিন্ন মজুরী হবেনা এমন বিধান সংবিধানে থাকলেও সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেটা কার্যকর নাই। বিশ্বায়নের আলোকে এ দেশের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীই শুধু নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও সুযোগ থেকে বঞ্চিত। বেসরকারি প্রথিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আরো বঞ্চিত ।
শিক্ষক সংগঠনের অবস্থান ঃ বিশ্ব শিক্ষক দিবসের ঐতিহাসিক ঘোষণা এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণের দাবীতে বাংলাদেশের শিক্ষকরা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে করেছে। তবে দলীয় লেজুড়বৃতিÍর বাইরে স্বাধীন পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে বৃহৎ আন্দোলন সেই অর্থে হয়নি। জোটগত দীর্ঘ আন্দোলনের কারণে ১৯৮১ সালের জানুয়ারী মাসে থেকে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ নিয়ে এম,পিও ভূক্ত হয়ে বর্তমানে মূলবেতনের ১০০ ভাগের অধিকারী হয়েছেন। বাড়ীভাড়া ১০০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০টাকা, উৎসব বোনাস মূলবেতনের ২৫ ভাগ, আর পুরো চাকুরী জীবনে ২টি পদোন্নতির শিকলে আটকে আছেন। কোন কারণে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বকেয়া হলে আদালতের শরনাপন্ন হওয়া ছাড়া বকেয়া টাকা পাওয়া যায়না। গভর্নিংবডি দলীয়করণ হওয়ায় সামাজিক মর্যাদাতেও শিক্ষকরা পিছিয়ে। এঅবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার জাতীয়করণই একমাত্র সমাধান। এটি কার্যকর হওয়ার আগে পিএসসির আদলে বিকল্প নিয়োগ কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ, বিভাগীয় পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি চান। শিক্ষকরা শুধু ট্রেড ইউনিয়নের জায়গা থেকে তাদের ভূমিকা পালন নয়, জাতি গড়ার কারিগর হিসেবে, দক্ষ, যোগ্য মানব সম্পদ তৈরীতে অবদান রাখতে চান। তাদের দিয়ে এই কাজগুলো করে নিতে সরকারকে উদ্দ্যোগী হতে হবে, শিক্ষকদের একাডেমিক ফ্রিডমের আওতায় কারিকুলাম সিলেবাস প্রনয়ন পাঠদানের স্বাধীনতা প্রদান, শিক্ষা কাজের বাইরে অন্য কাজে যুক্ত না করাসহ পেশাগত মর্যাদা নিশ্চিতকরণের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও রাজনীতিমুক্তকরণ করা এবং আর্থিক নিরাপত্বার জন্য শিক্ষায় অর্থায়ন বাড়ানো প্রয়োজন। ইউনেস্কো এবং সংবিধানের শিক্ষা প্রসঙ্গে সরকার যে অঙ্গিকার করেছেন তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার মান বৃদ্ধিসহ বিশ্ব শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য রক্ষা করা সম্ভব। সেইসাথে আন্তর্জাতিক ডিকক্লারেশনে স্বাক্ষরকারী দেশ যাতে তা বাস্তবায়ন করে, সে বিষয়ে ইউনেস্কোর তদারকি থাকা দরকার। বিশ্বব্যাপী শিক্ষক সমাজের মর্যাদা বৃদ্ধি পাক সেই সাথে শিক্ষক সমাজ ক্লাসরুমের পাঠদান কার্যক্রমসহ বস্তুনিষ্ঠভাবে দেশ জাতি ও দক্ষ মানুষ গড়ার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবেন এটা সবার প্রত্যাশা। শিক্ষক সমাজ তাদের অধিকার যেমন ভোগ করবেন সেইসাথে দায়িত্বও পালন করবেন সেই প্রত্যাশা সবার । জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যদশার আজকের যে করুণ অবস্থা,তার জন্য রাজনীতিকে অনেকেই দায়ি করছন,তবে শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকরা এর দায় এড়াতে পারবেন না।
===============================================================
লেখকঃ অধ্যক্ষ, লালমাটিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক,বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি,