Home আইন/আদালত দুর্নীতি ও অনিয়মের হোতা আবার ফিরেছেন পাউবো’র সিরাজগঞ্জ ডিভিশনে ॥ বগুড়া ও...

দুর্নীতি ও অনিয়মের হোতা আবার ফিরেছেন পাউবো’র সিরাজগঞ্জ ডিভিশনে ॥ বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ থেকে লুটপাট করেছেন কোটি কোটি টাকা- টাকা দিয়ে ম্যানেজ করছেন সব কিছু-


বিশ্ববিদ্যায়ল পরিক্রমা ডেস্ক :পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিরাজগঞ্জ পওর বিভাগে আবার ফিরে এসেছেন দুর্নীতি ও অনিয়মের এক হোতা। তিনি এতোটাই দুর্নীতিবাজ যে তার সহকর্মীরা তার নাম দিয়েছেন ‘গ্রেট দুর্নীতিবাজ।’ এই নামেই সবাই তাকে চিনেন। বগুড়ায় কর্মরত থাকা অবস্থায় এই প্রকৌশলী দুর্নীতিকে এতোটা উচ্চ মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন যে, তার সিনিয়র কর্মকর্তারা তার ভয়ে সব সময় তটস্থ থাকতেন। তার তত্ত্বাবধানে তৈরী করা ব্লক টাস্কফোর্সের আহবায়ক কাজী তোফায়েল হোসেন পর্যন্ত গুণতে চাইতেন না। যে কাজেই তাকে দেয়া হতো সেখানেই তিনি দুর্নীতি প্রবেশ করাতেন। লুটপাট করতেন রাশি রাশি টাকা। সেই টাকা দিয়ে আবার ম্যানেজ করতেন সব কিছু। বগুড়ার তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী তার দুর্নীতি কোন ভাবেই থামাতে না পেরে অবশেষে তাকে কাজ থেকে সাত মাস বিরত রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন।

‘গ্রেট দুর্নীতিবাজ’ নামে খ্যাত এই প্রকৌশলী বগুড়ার আগে সিরাজগঞ্জের সহকারী প্রকৌশলী ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে সময় প্রকল্পে দুর্নীতি করে প্রকল্পের বারোটা বাজিয়েছিলেন। সিরাজগঞ্জে তখন তিনি গড়ে তুলেছিলেন এক বিশাল দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট। এবার সিরাজগঞ্জে আসার আগেই তিনি সেই দুর্নীতিবাজ চক্রকে সক্রিয় করেছেন। ইতিমধ্যেই এই দুর্নীতিবাজ চক্র অফিস ক্যাম্পাসে তাদের আনাগোনা বৃদ্ধি করেছে। এই ‘গ্রেট দুর্নীতিবাজ’ প্রকৌশলী পদোন্নতি পাওয়ার সাথে সাথে কুড়িগ্রামের জাতীয় পার্টির একজন এমপিকে দিয়ে তদ্বির করিয়ে কুড়িগ্রামে যোগদান করে দুর্নীতির সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। পরে কুড়িগ্রামের কাজ কমে যাওয়ার পরে তিনি রংপুরে আসার জন্য ব্যাপক তদ্বির চালান। সে সময়েও তিনি এমপিকে দিয়ে তদ্বির করান। তবে এই সময় তিনি রংপুরে আসতে ব্যর্থ হন। এরও আগে জামালপুরের একজন এমপিকে দিয়ে ডিও লেটারের মাধ্যমে তদ্বির চালিয়ে জামালপুর পওর ডিভিশনে যোগদানের চেষ্টা চালান। অর্থ্যাৎ তার চাকুরী জীবনে সহকারী প্রকৌশলী থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তদ্বিরের মাধ্যমে পছন্দমাফিক জায়গায় পোষ্টিং নিতে সমর্থ হয়েছেন। এভাবে তিনি তাকে ‘তদ্বির-এ-আযম’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। তিনি শুধু তার নিজের তদ্বিরই করেননি- এক সময় তিনি তার সিনিয়র কর্মকর্তাদের রদবদলের তদ্বিরও করেছেন।

সূত্র মতে, বর্তমানে সিরাজগঞ্জে আসার তদ্বির চালাতে গিয়ে তিনি নিজেকে বুয়েটে ছাত্রলীগের নেতা বলে মিথ্যা পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তিনি ছাত্রলীগের নেতা তো দূরে থাক কর্মীও ছিলেন না। তিনি যখন বুয়েটে পড়তেন তখন বুয়েটে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন পাউবো’র ঢাকা ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আইনুল হক। তার কাছে জিজ্ঞাসা করলেই জানা যাবে আলোচ্য গ্রেট দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী বুয়েটে পড়াশোনা অবস্থায় ছাত্রলীগের নেতা দূরে থাক সমর্থক ছিলেন কি না?

সূত্র মতে, এই মহা দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীর ব্যাপারে চীফ ইঞ্জিনিয়ার (মনিটরিং) কাজী তোফায়েল হোসেনের দফতরে দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপক তথ্য রয়েছে। তাছাড়া, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে তাঁর সিনিয়র সহকর্মীরা অনেক তথ্য দিয়েছেন যা প্রকাশ করতে একটি পর্ব যথেষ্ট নয়।

অভিজ্ঞমহল মনে করেন, ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ‘গ্রেট দুর্নীতিবাজ’ বলে কুখ্যাত এই প্রকৌশলী সিরাজগঞ্জকে দুর্নীতির আখড়া বানানোর আগেই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে।