Home জাতীয় ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালালে, নারী আসনে পুরুষ বসলেই দণ্ড

ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালালে, নারী আসনে পুরুষ বসলেই দণ্ড


বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা ডেস্ক :  সোমবার মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালালে তিন মাস জেল এবং ৩৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে আইন অনুমোদন করা হয়েছে।

অনুমোদন দেওয়া সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭-এর খসড়ায় এ শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

গণপরিবহনে নারী আসনে পুরুষ বসলেও জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এতে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

শফিউল আলম বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। এই আইনের ৪০ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদণ্ড বা তিন লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আইনে গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাসের বিধান রাখা হয়েছে। আর লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে গাড়ির হেলপার বা কন্ডাক্টরের (ভাড়া আদায়কারী) লাইসেন্স থাকাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর হেলপার ও কন্ডাক্টরের যোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে, তাকে লিখতে ও পড়তে পারতে হবে। হেলপার বা কন্ডাক্টরের লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।’

আইনে বলা হয়েছে, ‘সংরক্ষিত নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের নির্ধারিত আসনে বসতে না দিয়ে কেউ ওই আসনে বসলে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড, চালক মোবাইল ফোন বা এরূপ কোনও ডিভাইস ব্যবহার করলে এক মাসের জেল বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড, বেপেরোয়া গাড়ি চালালে ২ বছরের কারাদণ্ড বা ২ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড, বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় দুর্ঘটনা ঘটলে তিন বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধার রাখা হয়েছে, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত নিহতের ঘটনা ঘটলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আমলযোগ্য অপরাধে বিনা পরোয়ানায় আটকের বিধান রাখা হয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নতুন আইনে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকার বেশি জরিমানা হলে সেটি জামিন অযোগ্য হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবে অপরাধীকে। আর অতিরিক্ত ওজন বহনে মালিক ও চালকের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে আইনে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পাঁচ টনের ট্রাক যদি ১৫ টন ওজন বহন করে সে ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদণ্ড বা তিন লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড, জাল লাইসেন্স ব্যবহার করলে চালক ও হেলপারের দুই বছরের কারাদণ্ড বা তিন লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ মোটর সাইকেলের ক্ষেত্রে চালক ও সহযাত্রীর দুজনেরই হেলমেট থাকতে হবে, গাড়ীর সামনে ও পেছনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে কোনো কিছু বহন করা যাবে না, চলন্ত অবস্থায় প্যাসেঞ্জার ওঠা-নামা করানো যাবে না, সাইড করে গাড়ি রেখে যানজট সৃষ্টি করা যাবে না, উল্টো পথে বা রং সাইট দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। এসব ভঙ্গ করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।’

শফিউল আলম বলেন, ‘আইনের ৪৫ ধারায় এ ধরনের ২৫টি নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনার মধ্যে প্রথম অংশে রয়েছে ১৪টি এবং অপর অংশে রয়েছে ১১টি। প্রথম অংশের নির্দেশনা অমান্য করলে তিন মাসের কারাদণ্ড ও ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশের নির্দেশনা অমান্য করলে একমাস কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।’