Home ক্যাম্পাস খবর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) তে ‘বাংলাদেশের ৫১ বছর: অর্জন, দ্বন্দ্ব এবং চ্যালেঞ্জ’...

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) তে ‘বাংলাদেশের ৫১ বছর: অর্জন, দ্বন্দ্ব এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠিত

মালয়েশিয়ার মালায়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতির অধ্যাপক এবং গ্লোবাল লেবার অর্গানাইজেশন (জিএলও) এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ (পিএইচডি, অক্সফোর্ড) সম্প্রতি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ৫১ বছরের অর্জন, অন্তর্দ্বন্দ্ব ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে একটি গণ বক্তৃতা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনএসইউর প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর ড. এম ইসমাইল হোসেন, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স এর ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আসাদ করিম খান প্রিয়, এনএসইউর ফ্যাকাল্টি সদস্যবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।

  
মালয়েশিয়ার মালায়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতির অধ্যাপক এবং গ্লোবাল লেবার অর্গানাইজেশন (জিএলও) এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ (পিএইচডি, অক্সফোর্ড) সম্প্রতি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ৫১ বছরের অর্জন, অন্তর্দ্বন্দ্ব ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে একটি গণ বক্তৃতা প্রদান করেন।  

অনুষ্ঠানটি ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমিক্স, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স, এনএসইউ এবং জিএলও-এর আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক যৌথভাবে আয়োজন করে। ইভেন্টের ইয়ুথ এনগেজমেন্ট পার্টনার হিসেবে সংযুক্ত ছিল এনএসইউ অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র পরিচালিত ‘ইয়ং ইকোনমিস্টস ফোরাম’ (ওয়াইইএফ)। 
  
অধ্যাপক নিয়াজ আসাদুল্লাহ তাঁর কৌতূহলী এবং চিন্তা-উদ্দীপক বক্তৃতায় স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বিভিন্ন সূচকে দশক-ভিত্তিক পরিসংখ্যান পর্যালোচনা সাপেক্ষে উন্নয়ন অর্জনগুলোকে খতিয়ে দেখেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, পাকিস্তান ও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের সামাজিক অর্জন সমূহ (যেমনঃ মেয়েদের স্কুলে যাওয়া, জনসংখ্যার উর্বরতা হ্রাস, শিশু টিকাদান কর্মসূচী, নারীর গর্ভনিরোধক ব্যবহার এবং জন্মদান ক্ষেত্রে ছেলে সন্তান প্রীতি  হ্রাস) সত্যিই ব্যতিক্রমী। ইতিবাচক বিচ্যুতির এই উদাহরণগুলো সামষ্টিকভাবে বাংলাদেশের ‘অসামান্য উন্নয়ন’ এর পরিচয় – এই  সামাজিক অগ্রগতির সবটুকুই অর্জিত হয় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জনের পূর্বেই। 

বক্তৃতার দ্বিতীয় পর্যায়ে ভবিষ্যত আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধির বিবেচনায় অধ্যাপক নিয়াজ বেশ কিছু নেতিবাচক বিচ্যুতি ও আশংকার বিষয়ে আলোকপাত করেন। বাংলাদেশের আগামী দশকের উন্নয়ন কৌশলকে বক্তা পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক মডেলের একটি ত্রুটিপূর্ণ সংস্করণ হিসাবে আখ্যায়িত করেন । আমাদের অর্থনীতিকে বেগবান ও টেকসই করতে চলমান বিবিধ মেগা প্রকল্পগুলোকে অবশ্যই মানব পুঁজি উন্নয়নের পরিপূরক হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক ব্যয় বৃদ্ধি, যা স্বাধীনতা উত্তর পাঁচ দশকে ভীষণভাবে উপেক্ষিত। বাংলাদেশের  বর্তমান মানব উন্নয়ন অবকাঠামো অত্যন্ত ভঙ্গুর এবং উদ্বেগজনক যা কিনা বর্তমান পূর্ব এশিয়ার মডেলের সঙ্গেও সংঘাতপূর্ণ ।

প্রফেসর নিয়াজ বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্থায়িত্বের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) ও জিডিপির অনুপাতে রপ্তানির হার কমে যাওয়া, সম্পদের অসমতা বৃদ্ধি, সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি, রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার অবক্ষয় এবং এর পাশাপাশি প্লুটোক্রেসির উত্থানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ।    

গণ বক্তৃতা শেষে আয়োজক নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি একটি মুক্ত প্রশ্নোত্তর অধিবেশন এর আয়োজন করে যেখানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র ও শিক্ষকবৃন্দ সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভবিষ্যত বিষয়ে বক্তাকে প্রশ্ন করেন। দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে। বক্তৃতায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনএসইউর প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর ড. এম ইসমাইল হোসেন, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স এর ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আসাদ করিম খান প্রিয়, এনএসইউর বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির শিক্ষকবৃন্দ সহ আরও অনেকে।