Home অন্যান্য ওয়েব্রিজ জটিলতাঃ বেনাপোল বন্দরে আটকে আছে শতাধিক পণ্যের চালান

ওয়েব্রিজ জটিলতাঃ বেনাপোল বন্দরে আটকে আছে শতাধিক পণ্যের চালান


মোঃ ফারুক আহম্মেদ : বেনাপোল স্থলবন্দরের ওয়েব্রিজের স্কেল নিয়ে কাস্টমস ও বন্দরের মধ্যে সৃষ্ট জটিলতার কারণে গত ১০ দিন ধরে বেনাপোল কাস্টমস ইনভেজটিকেশন রিসার্চ ম্যানেজমেন্ট (আইআরএম) পরীক্ষণ আমদানিকৃত কমার্শিয়াল পণ্যের পরীক্ষণ রিপোর্ট দিচ্ছেন না। এতে বেনাপোল বন্দরে পণ্য আটকে আছে। ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি হয়ে আসা পণ্য চালানগুলো বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের আগে বন্দর স্কেলে ট্রাকসহ পণ্যের মোট ওজন নিশ্চিত করা হয়। পণ্য আনলোড হওয়ার পরে আবার খালি ট্রাক ওজন করে পণ্যের নিট ওজন নিশ্চিত করে ওজন স্লিপ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে কয়েক মাসে বেনাপোলের কয়েকটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বন্দরের দেয়া ওজন স্লিপের ওজন কমিয়ে নকল স্লিপের সংযুক্ত করে পণ্য খালাস করে নিয়ে গেছে।

ওজন স্লিপে ওজন কমানোর কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ ঘটনায় পণ্যের সঠিক ওজন নিশ্চিত করতে ৭ আগস্ট ১১টি পণ্য চালানের ওজন নিশ্চিত হওয়ার জন্য বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহম্মেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বন্দর পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ ওজন স্লিপের সত্যতা যাচাই না করে কাস্টমসের চিঠির বিপরীতে কাস্টমস কমিশনার বরাবর অন্য একটি চিঠি দেয়।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য স্থলবন্দরের ওয়েব্রিজগুলোর প্রতিটি পণ্য চালানের ওজন স্লিপে কাস্টমস ও স্থলবন্দরের প্রতিনিধির যৌথ স্বাক্ষরে সম্পাদিত হয়। বেনাপোল স্থলবন্দরের অটোমেশন কার্যক্রম সফটওয়্যারের আপগ্রেডেশন কার্যক্রম চলমান। এ ঘটনায় কাস্টমস হাউজ (আইআরএম) কর্তৃক পণ্য পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে না। পরীক্ষণ রিপোর্ট না হলে সে চালানের শুল্কায়নও সম্ভব নয়। এ কারণে বন্দর থেকে আমদানি করা কমার্শিয়াল পণ্য খালাস হচ্ছে না।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে ওয়েব্রিজের ওজন নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ১০ দিন ধরে কমার্শিয়াল পণ্য কাস্টম (আইআরএম) পরীক্ষণ গ্রুপ পরীক্ষণ করলেও রিপোর্ট না হওয়ায় শুল্কায়ন হচ্ছে না। যে কারণে বন্দর থেকে খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ তবে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ওয়েব্রিজের ওজন নিশ্চিতসহ স্লিপে উভয়ই স্বাক্ষর করলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আমি আশাবাদী। বন্দর থেকে পণ্য খালাস না হওয়ায় শতাধিক কমার্শিয়াল পণ্য চালান বন্দরে আটকে আছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমদানিকারকরা।

বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার শাফায়েত হোসেন বলেন, কয়েক মাসে বেনাপোলের কয়েকটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বন্দরের দেয়া ওজন স্লিপ নকল করে পণ্যের ওজন কম দেখিয়ে খালাস করেছে। ওজন স্লিপে ওজন কমানোর কারণে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ ঘটনায় পণ্যের সঠিক ওজন নিশ্চিত হওয়ার জন্য ৭ আগস্ট ১১টি পণ্য চালানের বন্দর স্কেলের ওজন নিশ্চিত হতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন, পণ্য পরীক্ষণের সময় তো কাস্টমস কর্মকর্তারা ডিজিটাল স্কেলে ওজন নিশ্চিত করে থাকেন। আসলে সমস্যা কোথায় হচ্ছে আমার জানা নেই।

বেনাপোল প্রতিনিধি