
স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্তিকরণ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে।মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের ব্যক্তিগত কোড নম্বর যুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
কোড নম্বর পাওয়ার পর শিক্ষকরা এমপিওর আবেদন করবেন। নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা চলতি অর্থবছর থেকে বেতন ভাতা পাবেন।
জানা গেছে, গত ২২ এপ্রিল বেসরকারি শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানোর পর এ কার্যক্রম নতুন করে শুরু করা হয়েছে।ইতোমধ্যেই স্কুল কলেজের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। ১ হাজার ৬৫০ টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হলেও সেখান থেকে কিছু স্কুল কলেজ বাদ পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র।
বিষয়ে সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, প্রথম ধাপের কাজ শেষ হলো। আরো দুইটি ধাপের কাজ বাকি আছে। আশা করছি খুব শিগগিরই সেসব কাজ শেষ হবে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রায় এক দশক পর গত বছরের ২৩ অক্টোবর একযোগে দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর ওই বছরের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। নতুন এমপিও পাওয়া এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের গত বছরের (২০১৯) জুলাই থেকে নির্ধারিত বেতন-ভাতা পাওয়ার কথা। কিন্তু এখনো এমপিও তালিকা প্রকাশ করলেও বেতন ছাড়ের আদেশ জারি করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সাধারণ ছুটি থাকায় এমপিওভুক্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে বন্ধের মধ্যে চলমান এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন এমপিওভুক্তি করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করার পর তা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করা হয়। একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটির গঠনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের ব্যক্তিগত কোড নম্বর দেয়া হবে। কাজ শেষে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। বন্ধের মধ্যেও এ কার্যক্রম শেষ করতে নতুনভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে এসব শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সুবিধা প্রদান করা হবে।
২০১৮ সালে এমপিওভুক্তির জন্য প্রায় ৯ হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে আবেদন করে। এই আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ২ হাজার ৭৩০টি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির জন্য তালিকা প্রকাশ করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ছয় মাস ধরে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি অংশের বেতন-ভাতা চালু না হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানবিক আবেদন করা হয়। তারপর এ কার্যক্রম আবারও শুরু করার সিদ্ধান্ত নিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, চূড়ান্ত তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোড নম্বর দেয়া হবে। এই কোড নম্বর ছাড়া শিক্ষক ও কর্মচারীরা এমপিওর জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কোড নম্বর পাওয়ার পর শিক্ষকরা এমপিওর আবেদন করবেন।
গত বছর অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওভুক্তির প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্রচুর ভুল ও তথ্যবিভ্রাট এবং অনেক প্রতিষ্ঠান অসথ্য তথ্য দেয়। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। শিক্ষাবোর্ডের সহায়তায় স্কুল ও কলেজের যাচাই-বাছাই শেষ করে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। তবে, মাদরাসা ও কারিগরির কোনো খবর নেই অদ্যাবধি।