Home আইটি ইন্টারনেট বন্ধে ইসি-বিটিআরসি বৈঠক

ইন্টারনেট বন্ধে ইসি-বিটিআরসি বৈঠক


ভোটের দিন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্তে ইসি এখনও অনড়। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ফোরজি ও থ্রিজি সেবা বন্ধ রেখে শুধু টুজি সেবা চালু রাখা হবে।

একই সঙ্গে ভোটের আগের এবং পরের দিনও অনলাইন ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আইনগত সমস্যা এড়াতে নির্বাচন কমিশন বিটিআরসির সহযোগিতায় লিখিত নির্দেশ ছাড়াই এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। কিন্তু মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লিখিত নির্দেশ ছাড়া এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া তাদের জন্য সমস্যার কারণ হবে।

এর আগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় থ্রিজি ও ফোরজি সেবা সাময়িক বন্ধ ছিল। তখন বিটিআরসি জানিয়েছিল, হয়তো কারিগরি কোনো সমস্যার কারণে এটা বন্ধ হয়েছে।

বৈঠক সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ভোটের দিন থ্রিজি ও ফোরজি সেবা বন্ধ রেখে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখার সিদ্ধান্ত হলেও ভোটের আগের ও পরের দিন কী ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ১৯শে ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ভোটের দিন বিকেল চারটার পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখার আভাস দিয়েছিলেন।

ইসি সচিব বলেন, ‘বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে আনতে আমাদেরকে অনুরোধ জানিয়েছেন।’ ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে আনলে ভোটের ফল পাঠাতে খুব অসুবিধা হবে কি না এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।

এ সময় প্রশিক্ষণার্থীরা জানান, ইন্টারনেটের গতি সীমিত থাকলে ফলাফল পাঠাতে সমস্যা হবে। নির্বাচন কমিশন সচিব প্রশিক্ষণার্থীদের আবারও বলেন, ‘ভোট গণনার আগে বিকাল ৫টা আগ পর্যন্ত যদি গতি কম থাকে?’

এ প্রশ্নে প্রশিক্ষণার্থীরা জানান, ‘এতে সমস্যা হবে না।’ পরে সচিব বলেন, ‘আচ্ছা আমরা বিষয়টি দেখবো। তাহলে ৩০শে ডিসেম্বর চারটার পরে যদি ফুল স্পিডে ইন্টারনেট সংযোগ থাকে, তবে কোনো সমস্যা হবে না। বিষয়টি আমরা বিবেচনা করবো।’

জানা যায়, বিটিআরসি নির্বাচন কমিশনকে চারটি প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহূত সব মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করা, মোবাইল ইন্টারনেটকে টুজিতে নামিয়ে এনে থ্রিজি এবং ফোরজি ভোটের দিনে বন্ধ রাখা এবং নির্দিষ্ট এলাকা-ভিত্তিক বিভিন্ন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া।

বিটিআরসি’র কর্মকর্তাদের মতে, মোবাইল ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগবে। কিন্তু এটা করা হলে ব্যবসা বাণিজ্যসহ নাগরিক সেবার ওপর নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করবে। কারণ, এটিএম থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি অনেক কিছুই এখন ইন্টারনেটে চলে গোটা বিশ্বের কাছেও তখন বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।

আর শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ করতে বিটিআরসি’র ২০ মিনিটের মতো সময় লাগবে। আর টুজি চালু রেখে থ্রিজি এবং ফোরজি বন্ধ করতে গেলে একটু বেশি সময় লাগবে। মোবাইল ইন্টারনেট টুজিতে নামিয়ে আনলে প্রকৃতপক্ষে তা দিয়ে ইউটিউব তো চলবেই না এমনকি ফেসবুকে ছবি আপলোড করা বা ফেসবুক ব্রাউজের সময় ছবিও দেখা যাবে না।