Home খেলাধূলা বল বুঝতে না পেরে বোল্ড মুমিনুল

বল বুঝতে না পেরে বোল্ড মুমিনুল


পরিক্রমা ডেস্ক: ইন্দোরে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেছে বাংলাদেশ। ৩৮ ওভারে ৪ উইকেটে ১০০ রান সফরকারীদের। ক্রিজে আছেন মুশফিকুর রহিম ও ‍মাহমুদউল্লাহ।দারুণ এক ইনিংস খেলছিলেন মুমিনুল হক। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচে হাফসেঞ্চুরির আভাস দিচ্ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বোল্ড হলেন তিনি। হয়তো ভেবেছিলেন, অশ্বিনের অফস্পিন বাঁক নিয়ে চলে যাবে ব্যাটের পাশ দিয়ে। তাই শট নেওয়ার কোনও চেষ্টাই করেননি মুমিনুল। বল ছেড়ে দেন, কিন্তু ভেঙে যায় অফ স্টাম্প। ৮০ বলে ৬ চারে ৩৭ রানে আউট হন মুমিনুল। ভাঙে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তার ৬৮ রানের দারুণ জুটি দ্বিতীয় জীবন পেলেন মুশফিক আবার জীবন পেলেন মুশফিকুর রহিম। ৩ রানে বিরাট কোহলির হাত ফসকে বেঁচে যান বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে তিনি দ্বিতীয়বার জীবন পান সহ-অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানের কাছে। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারে তার উঁচু শটটি স্লিপে দাঁড়ানো রাহানে ধরতে পারেননি, তখন মুশফিকের রান ছিল ১৪। হতাশার প্রথম সেশনে মুমিনুলের প্রতিরোধ ইমরুল কায়েস আউট হওয়ার পর মুমিনুল হক মাঠে নামেন। কয়েক বল হতেই আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামের বিদায়ের স্বাক্ষী হন তিনি। এরপর অধিনায়ক প্রতিরোধ গড়েন মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে। আরও একটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। হতাশার এই প্রথম সেশনে মুমিনুল ভরসার প্রতীক হয়ে আছেন ক্রিজে। ৫৬ বলে চারটি চারে ২২ রানে অপরাজিত তিনি। তার সঙ্গে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চে গেছেন মুশফিকুর রহিম। ৩ রানে বিরাট কোহলির হাতে জীবন পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। উমেশ যাদবের বলে তার ক্যাচ থার্ড স্লিপে ধরতে পারেননি ভারতের অধিনায়ক। ৩ উইকেটে ৬৩ রানে প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ  ১২ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর ডানহাতি ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন মুমিনুল হক। ১১ ওভার ক্রিজ আঁকড়ে ছিলেন তারা, জুটিতে যোগ করেন ১৯ রান। এই জুটি ভেঙে গেছে মোহাম্মদ স্যামির বলে। ৩৬ বলে ১ চারে ১২ রান করে এলবিডাব্লিউ হন মিঠুন। দুই ওপেনারের বিদায়মাত্র ১২ রানের মধ্যে দুই ওপেনার আউট হলেন। প্রায় এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ইমরুল কায়েস। ষষ্ঠ ওভারে উমেশ যাদবের শেষ বলে থার্ড স্লিপে তিনি ক্যাচ হন সহ-অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানের। ১৮ বল খেলে ৬ রান করেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ওপেনার, চার ছিল একটি। পরের ওভারে সাদমান ইসলাম পেছনে উইকেট দেন ঋদ্ধিমান সাহাকে। এই ওপেনারও ৬ রান করে ইশান্ত শর্মার শিকার হন। তার ২৪ বলের ইনিংসে ছিল একটি চার।বাংলাদেশের সতর্ক শুরু ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদবের পেস সতর্ক হয়ে সামাল দিচ্ছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম। চতুর্থ ওভারে প্রথম রানের দেখা পায় বাংলাদেশ।ইন্দোর টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ইন্দোর টেস্টে টস জিতে ভারতের বিপক্ষে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি খেলতে দুই দল মাঠে নেমেছে। ৭ ব্যাটসম্যান ও চার বোলার নিয়ে মাঠে বাংলাদেশ। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে চ্যানেল নাইন ও গাজী টেলিভিশন। টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির ১৯ বছরের মাথায় এই প্রথম ভারতের মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। রোমাঞ্চের সঙ্গে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে টাইগারদের জন্য। গত কয়েক বছরে ভারত নিজের মাটিতে কতটা শক্তিশালী, সেটা পরিসংখ্যানে চোখ বুলালেই বোঝা যায়। নিজেদের মাঠে টানা ১২ টেস্টে হারের মুখ দেখেনি ভারত। এ সময়ে ড্র করেছে মাত্র তিনটি, বাকি ৯ টেস্টে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছেড়েছে তারা।

এর আগের রেকর্ডটাও ঈর্ষণীয়। ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারত সাদা পোশাকে দেশের মাটিতে কোনও টেস্ট হারেনি। ২০ টেস্টে ড্র মাত্র তিনটিতে, বাকি ১৭ টেস্টে শেষ হাসি হেসেছে ভারত। সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকাকে আক্ষরিক অর্থেই উড়িয়ে দিয়েছে তারা। প্রোটিয়াদের ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে ভারত।

এ তো গেল দেশের মাটিতে তাদের পরিসংখ্যান। বাংলাদেশের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়েও বিরাট কোহলিরা যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে। ৯ টেস্টে বৃষ্টির আশীর্বাদে দুটি ম্যাচ ড্র করা গেলেও দীর্ঘ পথচলায় জয়ের মঞ্চ কখনোই তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। হায়দরাবাদে দুই দলের সবশেষ টেস্ট হয়েছে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একমাত্র ওই টেস্টটি ভারত জিতেছিল ২০৮ রানে। অতীত এই ইতিহাস পাল্টাতেই ইন্দোর টেস্টে বাংলাদেশ নামছে নতুন অধিনায়ক মুমিনুলের নেতৃত্বে।

বাংলাদেশ একাদশ: মুমিনুল হক (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সাদমান ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, এবাদত হোসেন।

ভারত একাদশ: বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পুজারা, আজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ স্যামি, উমেশ যাদব।