Home ক্যাম্পাস খবর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘মূলসুত্রে ফেরা: প্যারাডিগম্যাটিক আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহের সুবিধাসমূহ’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘মূলসুত্রে ফেরা: প্যারাডিগম্যাটিক আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহের সুবিধাসমূহ’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত


সম্প্রতি এ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ “মূলসুত্রে ফেরা: প্যারাডিগম্যাটিক আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহের সুবিধাসমূহ” শীর্ষক একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এই ওয়েবিনারে অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ক্যাটেরিনা লিনোস। তিনি আরভিং জি. এবং এলেনর ডি. ট্রাজেন আইনের অধ্যাপক এবং মিলার সেন্টার ফর গ্লোবাল চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড দ্য ল; বার্কলে ল স্কুল, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে এর সহ-পরিচালক। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ রিজওয়ানুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য রাখেন এবং ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন।

একুশ শতকের শুরুতে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গঠনের কথা তুলে ধরে বক্তা তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ এবং অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদির মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি, বিংশ শতাব্দীতে গঠিত প্রথাগত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি যেভাবে কাজ করছে তাতে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিল না। জাতিসংঘ এবং অনুরূপ সংস্থাগুলিতে, উন্নয়নশীল দেশগুলি সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে অধিকতর শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। তাই, পশ্চিমা দেশগুলো একধরনের সমান্তরাল ব্যবস্থা গড়ে তুলে, যেগুলো অনেকটা আন্তরাষ্ট্রীয় নেটওয়ার্ক এর মত। এর মধ্যে কয়েকটি ছিল ‘ইচ্ছুক জোট’-এর মত যেখানে মাত্র কিছু সংখ্যক সমমনা রাষ্ট্র যোগ দেয়।

অধ্যাপক লিনোস তাঁর সহ-লেখক মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টিনা ডাউগিরডাস এর সমন্বয়ে, নেটওয়ার্কগুলি কীভাবে কার্যকর এবং নমনীয়ভাবে আরো দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা দেন। বক্তা প্রশ্ন করেন, কেন রাষ্ট্রগুলো দ্বিপাক্ষিকভাবে সকল বিষয় নিষ্পত্তি করার চেষ্টা না করে আন্তর্জাতিক সংস্থা গড়ে তোলে। তিনি এটির উত্তর দিয়েছেন বিশ্বব্যাপী সমস্যার উদাহরণ দিয়ে, যেমন কোভিড-১৯ এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, যার কোনোটিই বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া ছাড়া সমাধান করা যায় না। তিনি আরও যোগ করেছেন যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির প্রধান সুবিধা হল নিরপেক্ষতা এবং অনেক অংশীগোষ্ঠীর কাছে বৃহত্তর আবেদন।

অধ্যাপক লিনোস ব্যাখ্যা করেন যে, সদস্য হিসাবে একাধিক সার্বভৌম রাষ্ট্র, রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একটি চুক্তি এবং একটি স্বাধীন সচিবালয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংস্থা গড়ে ওঠে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তাদের কর্মীরা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে নানা রকম বিশেষ সুবিধা এবং দায়মুক্তি পেয়ে থাকেন। তিনি বলেন যে, যদিও কেউ আন্তর্জাতিক সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করতে চায় বা তাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চায়, তারা তা করতে পারে না; কারণ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে দায়মুক্তি তাদের সুরক্ষা দিয়ে থাকে ।

বক্তা আন্তরাষ্ট্রীয় নেটওয়ার্কের রূপ পরিবর্তনের কিছু উদাহরণ দেন। তিনি বিশদভাবে বলেন যে নেটওয়ার্কগুলি নমনীয়তা এবং সমমনা রাষ্ট্রের মাধ্যমে কাজ করে বটে, কিন্তু তারা সনাতন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মত সর্বজন গ্রাহ্যতা পায় না যার ফলে তারা অনেক সময় কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে পারে না। তাই কার্যত অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গুলো ক্রমশ প্রথাগত আন্ত:রাষ্ট্রীয় সংস্থার বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করে ফেলে।

এটি ছিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার সিরিজের ৩৬তম ওয়েবিনার, যা ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, হংকং, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা অধ্যাপকবৃন্দ এই ওয়েবিনার সিরিজটির বিভিন্ন পর্বে আইনের বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করে আসছেন।