Home জাতীয় মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে দু’বাংলার মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে দু’বাংলার মিলনমেলা অনুষ্ঠিত


মোঃ ফারুক আহম্মেদ : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বেনাপোলে ভার-বাংলাদেশ নোমান্সল্যান্ড এলাকায় দু‘বাংলার মানুষ মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করলো। বেনাপোল সীমান্ত মুখরিত হলো দুই বাংলার মিলন মেলায়। উভয় বাংলার ভাষাপ্রেমী মানুষ শহিদদের প্রতি জানিয়েছে গভীর শ্রদ্ধা। দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে দুই বাংলার মানুষকে অনুপ্রাণিত করছে।

মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচায্য এমপি, যশোর-১ (শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল নোম্যান্সল্যান্ডে শহিদ বেদীর পাদদেশে পৌঁছালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বিধায়ক শ্রীমতি বীনা মন্ডল, বনগাঁও পৌর চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ, সাবেক সাংসদ মমতা ঠাকুরের নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা হাজার হাজার বাংলা ভাষী মানুষ বাংলাদেশিদের ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেয়। দু’দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তাগন অস্থায়ী শহিদ বেদীতে পুস্পর্াঘ নিবেদন করেন। শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শত:স্ফূর্তভাবে অংশ নেয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন ও ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, এদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র বিকশিত হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ আজ মাথা চড়া দিয়ে উঠেছে। দুই দেশের নেতৃত্বে এই জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা হবে। তাদের ভাষা ও ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের দুই দেশের মধ্যে উপস্থিত সৌহাদ্যর্পূর্ণ সম্পকের্র ভিতকে আরো শক্ত করবে।

অনুষ্ঠানে দু‘বাংলার আমন্ত্রিত অতিথি মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তারা, কবি, সাহিত্যক, লেখক, সঙ্গীত শিল্পী এবং দু‘বাংলার ভাষা প্রেমী মানুষেরা অংশগ্রহণ করেছেন। দু‘বাংলার মানুষের এ মিলন উভয় দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে অনুষ্ঠানকে সার্থক করতে দু‘দেশের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকদফা বৈঠকও হয়েছে দুই সীমান্তে। এবার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ‘জয় বাংলা, জয় ভারত’ যৌথ শ্লোগানে বেনাপোল-পেট্রাপোল চেকপোষ্টে এবার উদযাপিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

এ সময় পেট্রাপোল ও বেনাপোল চেকপোস্টে ঢল নামে হাজার হাজার মানুষের। ক্ষনিকের জন্য হলেও স্তব্দ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক সীমারেখা।

২০০২ সাল থেকে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল চেকপোস্টের জিরো পয়েন্টে মাতৃভাষা দিবস পালন করে আসছে দু‘বাংলার মানুষ। সমগ্র অনুষ্ঠানে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে দুই সীমান্তে। বেনাপোল-পেট্রাপোল চেকপোস্টে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও বিএসএফ অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে দুই সীমান্তে।

বেনাপোল প্রতিনিধি