Home ক্যাম্পাস খবর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভাইস-চ্যান্সেলরের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণিত

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভাইস-চ্যান্সেলরের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণিত


 

ক্যাম্পাক প্রতিবেদকঃ দেশের আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের ফসল ‘ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়’। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আহসান উল্লাহ’র অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার চারিত্রিক স্খলনসহ ব্যাপক দূর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অভিভাবক ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন’। তবে আশ্চর্য্যের বিষয় হলো অভিযুক্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ১৯ জুন’২৩ তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে ব্যবস্থা নিতে বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলরকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, ইউজিসি’র তদন্ত রিপোর্ট দীর্ঘদিন আটকে রেখে প্রাক্তন ভিসি আহসান উল্লাহ’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ঠিক একই অবস্থা ঘটেছে ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’ এর প্রাক্তন ভাইস-চ্যান্সেলর মাওলানা আবুল হাসান মো. সাদেক’র বেলায়ও। ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর-এর নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি মাওলানা সাদেক কৃত চৌর্যকর্ম কর্মসহ বিবিধ অনিয়ম-অনৈতিকতার প্রমান পায়। সে মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশমালা প্রেরণ করে সংশ্লিষ্ট কমিটি। কিন্তু তদন্ত রিপোর্টটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় পড়ে ছিল দীর্ঘ ৪ মাস। পরবর্তীতে বিষয়টি সাংবাদিক মহলের গোচরে এলে তারা ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করে। ফলশ্রুতিতে এতদ বিষয়েও মাওলানা সাদেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলরসহ অন্যন্য কর্তৃপক্ষ এবং দুদককে নির্দেশ প্রদান করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজ জেলা চট্টগ্রাম এবং দলীয় প্রীতি সর্বাগ্রে রাখতেন। এজন্য তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও বয়সের ক্ষেত্রে ব্যাপক শিথিলতা আনেন্। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পূর্বেই তিনি ১১২ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দেন্। শিক্ষক কর্মকর্তার ক্ষেত্রে ১৫ লক্ষ টাকা এবং কর্মচারীর ক্ষেত্রে ৫-১০ লক্ষ টাকা হারে আদায় করে ১০ কোটি টাকার উপর হাতিয়ে নেন্।

তার বিরুদ্ধে আরো যেসব অভিযোগ রয়েছে তাহলো, তিনি চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানা জায়াতের ১৩ নাম্বার ক্রমিকের রোকন, একাধিক পুরুষ ও বালকের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা ও ৩ নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যার পর নিজ এলাকা বাকলিয়ায় জামায়াতে ইসলামীকে পূর্ণগঠন ও শক্তিশালী করায় ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রয়োজনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডিস্থ ভবনটি আবাসিক ভবনে রুপান্তরিত করেন। সেখানে শিশু বলাৎকারসহ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী শহিদুল ও সামিউলের সাথে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতেন। তার যাবতীয় অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দোসর ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার আবু হানিফ এবং সিন্ডিকেট সদস্য মো: হাসান মাহমুদ। ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান।