Home জাতীয় শিক্ষাক্ষেত্রে রোল মডেল এখন বাংলাদেশ- বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি

শিক্ষাক্ষেত্রে রোল মডেল এখন বাংলাদেশ- বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি


পরিক্রমা ডেস্ক : ঢাকা বিভাগে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। ১১ মার্চ সোমবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) কাকরাইল মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা আয়োজন করে ‘মাদক নিমূর্লে করণীয়’, ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম, শিক্ষা বিষয়ক এবং ঢাকা বিভাগের জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত প্রায় ১ হাজার কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক ও বি.পরিক্রমানিউজবিডি.কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে ছাত্রছাত্রীকে সেভাবে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। লেখাপড়া করে শুধু সার্টিফিকেট নিলে হবে না ছাত্র-ছাত্রীকে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে সবক্ষেত্রে।

তিনি বলেন- পূর্বের যে কোন সরকার থেকে বর্তমান সরকার এর আমলে শিক্ষার হার বেশি। শিক্ষা খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। নারী শিক্ষার অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ছেলেমেয়ের ভর্তির হার সমান। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব। এ সরকারের আমলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে গত ১৪ বছরের অর্জন অবিস্মরণীয়। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা আর শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে রীতিমতো বিপ্লব ঘটেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে রোল মডেল এখন বাংলাদেশ।

স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করেন। এক সঙ্গে ৩৭ হাজার প্রাথমিক স্কুলকে জাতীয়করণ করা হয়। বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে এটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হিসেবে ধরা হয়। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি এবং শিক্ষা বিস্তারে বঙ্গবন্ধুর এ সিদ্ধান্ত বিশেষ ভূমিকা রাখে। বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলকে সরকারিকরণ করেছেন। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

পিছিয়ে পড়া মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করেছে বর্তমান সরকার। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে মাদ্রাসা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ শিক্ষায় অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। কওমি মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এনে বিশ্বমানের শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দেশে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।

পরিশেষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমাকে এমন সুন্দর আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রধান আলোচক ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন— শিক্ষা একজন ব্যক্তিকে অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে আসে। আর নৈতিকতা মানুষের জীবনকে করে তোলে সুন্দর ও সমৃদ্ধ। এ দুটির সমন্বয় হলে একজন মানুষ সৎ, চরিত্রবান, আল্লাহভীরু, দেশপ্রেমিক ও দায়ত্বিশীল হয়ে ওঠে। কাজেই বর্তমান সমাজের জন্য নৈতিক শিক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন দেশে, শিক্ষাবিদ ও দার্শনিকরা নিজস্ব চিন্তাচেতনার আলোকে শিক্ষার বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও সংজ্ঞা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা হচ্ছে সেই শক্তি, যার দ্বারা সঠিক সময়ে আনন্দ ও বেদনার অনুভূতি জন্মায়। এটি শিক্ষার্থীর দেহে ও মনে সব সুন্দর ও অন্তর্নিহিত শক্তিকে বিকশিত করে তোলে। শিক্ষার সাহায্যে মানুষ নিজেকে ও বিশ্বকে জানতে পারে।’

তিনি বলেন- যে শিক্ষা মানুষকে অন্যের পাশে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করে না, যে শিক্ষা মানুষকে ভীরুতা জয় করতে শেখায় না, যে শিক্ষা জীবনে ও মরণে আলো দিতে পারে না, যে শিক্ষা মানুষকে মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে স্বার্থপরতায় অন্ধ করে তোলে, যে শিক্ষা মানুষকে উগ্র ইন্দ্রিয় সুখের জন্য হত্যার কারণ তৈরি করে, যে শিক্ষা সতীর্থকে নির্মমভাবে খুন করতে উদ্বুদ্ধ করে, যে শিক্ষা ভালোবাসার কবর রচনা করে ঘৃণাকে উসকে দিয়ে হিংসা ও হানাহানির প্রসার ঘটায়, যে শিক্ষা ঐক্যের পরিবর্তে শুধু বিভেদই বাড়ায়, আজ সর্বত্র সেই শিক্ষারই প্রচার ও প্রসার। এ হচ্ছে বস্তুবাদী শিক্ষার দৃষ্টান্ত।

পরিশেষে তিনি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব সুজিত রায় নন্দী; বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের; পাওয়ার সেল বিদ্যুৎ বিভাগ এর মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন; এনপিআই ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ মানিকগঞ্জ এর চেয়ারম্যান লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রহমান; প্রাইম ইউভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইঞ্জি. মো. হুমায়ুন কবির; এফবিসিসিআই এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব রাশেদুল হোসেন চৌধুরী রনি; মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়-এর অতিরিক্ত পরিচালক জনাব মো: মজিবুর রহমান পাটওয়ারী ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ সহকারী পরিচালক ফয়সালুর রহমান।

অনুষ্ঠানে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ১০০০ জন কৃতি শিক্ষার্থীদেরকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।