Home ধর্ম আল্লাহর কোরআন ও নবীর হাদিস অনুযায়ী নিজেকে সুধরিয়ে নিতে হবে

আল্লাহর কোরআন ও নবীর হাদিস অনুযায়ী নিজেকে সুধরিয়ে নিতে হবে

-মো: রফিকুল ইসলাম

মোঃ রফিকুল ইসলাম : ১৯৮৪ সালে ঢাকায় একটি চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস ফার্মে অডিট সহকারী হিসাবে যোগদান করি। উক্ত ফার্মে কাজ করার সুবাদে বহু অফিসে যেতে হয়েছে। অনেক কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে কথা হয়েছে এবং অনেক কোম্পানী অডিট করেছি। অনেক কোম্পানী ইনভেষ্টিগেশন করেছি। তাই আমার সেই পুরাতন কোম্পানীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে আমার সেই শ্রদ্ধাভাজন স্যারকে ধন্যবাদ এবং দোয়া করি আল্লাহ যেন তাঁকে নেক হায়াত দান করেন। আমিন।

সেই সময় এবং আজকের সময়ের পার্থক্যটা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি, যাতে সহজে বুঝতে পারেন। মানুষ পর্দার আড়ালে লুকিয়ে অনেকেই অনেক কিছু করে যা মানুষের সামনে আসে না যার ফলে সাধারণ মানুষ যাচাই করতে পারে না।

আজকে আমার সেই পূর্বেকার অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি। সেই সময় অফিসে যহরের নামাজে হাতেগোনা কয়েকজন বা কেউ কেউ একাএকি নামাজ আদায় করেছেন। সই সময়ে মানুষ এত বেশী ধর্ম কর্ম নিয়ে ব্যস্ত ছিল না। তবে তাদের মধ্যে সততা, ভালোবাসা, সহযোগীতা ছিল। কোন কাজে গেলে কাজটি হাসি মুখে করে দিতো।

বর্তমানে প্রতিটি অফিসেই জামাতবদ্ধ হয়ে নামাজ আদায় করেন। কোন কোন অফিসে নামাজের জামাত দুই তিন/বার হয়। মানুষের মুখ ভর্তি দাঁড়ি আবার কারো মাথায় টুপি আবার কেউ কেউ পায়জামা পাঞ্জাবি পড়ে অফিস করেন। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য আজকে তাদের মধ্যে সততা, ভালোবাসা, সহযোগীতা, মানবতার অভাব দেখা দিয়েছে। তাহলে মানুষ কি দিন দিন ধার্মিক হয়ে যাচ্ছে, না কি ঘোমরাহী হয়ে যাচ্ছে? না কি ধর্ম ব্যবহার করে অপকর্মের দিকে ধাবিত হচ্ছে তার কিছু নমুনা উপস্থাপন করছি।

১। কোন কাজের জন্য কোন সরকারী অফিসে গেলে দেখবেন সবাই নামাজ পড়ছেন। আবার কেউ হজ্জ করেছেন। দেখতে একজন মাওলানা। আপনার কোন কাজের ব্যাপারে বলতেই দেখবেন মোরামুরি করেন, কারণ ঘুষ না দিলে আপনার কাজটি হবে না। সরকারী কর্মকর্তাগণ ঘুষ ছাড়া কিছুই বুঝেন না। অথচ নামাজ পড়তে পড়তে কপালে কালো দাগ এবং মুখে দাঁড়ি। আজকাল এটা তাদের লেবাজ মাত্র।

২। আগেকার তুলনায় বর্তমানের মানুষ বেশী পরহেজগার, ওয়াজ মাহফিলে যায়, তাবলিক করেন, ধর্মকর্ম করেন। মুখে দাঁড়ি রাখেন, অথচ রমজান মাস এলে জিনিসপত্রের দাম দশগুন, বিশগুন বা আরও অধিক গুন বাড়িয়ে দেন- এর কারণ কি? তবে কি মানুষ পর্দার আড়ালে শুধু লোক দেখানো লেবাজ দেখাচ্ছেন?

সার কথা প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স:) এর বাণী শেষ জমানায় মানুষের মধ্য থেকে সততা, ভালোবাসা, মানবতা উঠে যাবে। মসজিদগুলো চাকচিক্যে মসজিদ তৈরী করবে। আলেমদের মধ্যে আধুনিকতার ছাপ দেখা দিবে। আলেমেগন টাকার বিনিময় কোরআন শিক্ষা দিবে। সুউচ্চু বিল্ডিং তৈরী হবে। মানুষের মধ্যে ভালোবাসা থাকবে না। টাকার মান কমে যাবে। আজকে তাই দেখা দিচ্ছে।

অতএব এরথেকে বাঁচতে হবে পাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। পাপমুক্ত সমাজ গড়তে হবে। নিজেকে সুধরানোর জন্য নিজেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে, যেমন: পাপ করবো না, কোন মিথ্যা বলবো না, নিজে ঠকবো না, অপরকেও ঠকাবো না, বিপদে মানুষের পাশে থাকতে হবে। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স:) এর বাণী “আল্লাহর কোরআন এবং নবীর হাদিস আকরিয়ে ধরতে হবে এবং সেই অনুযায়ী আমল করতে হবে। তবেই ঈমান নিয়ে মরতে পারবো। আল্লাহ আমাদের সকলকে আল্লাহর কোরআন এবং নবীর হাদিস অনুযায়ী চলার তৌওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : মোঃ রফিকুল ইসলাম; একান্ত সচিব, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ, ঢাকা, বাংলাদেশ।