Home স্বাক্ষাৎকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ...

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান, অধ্যক্ষ, কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ


প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান, অধ্যক্ষ হিসেবে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ২৭/০১/২০১৮ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ১৩তম বিসিএস -এর মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডারে ১৯৯৪ সালে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। চাকুরী জীবনে তিনি গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ; আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ; শাহ সুলতান কলেজ, বগুড়া; গফরগাঁও সরকারি কলেজ, ময়মনসিংহ; শহীদ আসাদ কলেজ, নরসিংদী; শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ, শেরপুর; নেত্রকোণা সরকারি কলেজ, নেত্রকোণায় কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও উপাধ্যক্ষ হিসাবে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, কিশোরগঞ্জ; নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজ, নেত্রকোণা এবং নবীনগর সরকারি কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৮০ সালে হোসেন্দি উচ্চ বিদ্যালয় পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ থেকে এসএসসি, ১৯৮২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্মান এবং ১৯৮৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি জন্মসূত্রে কিশোরগঞ্জ জেলার একজন স্থায়ী বাসিন্দা।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা : কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বর্তমান শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইছি।
প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান : কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ নারী শিক্ষার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। কলেজটি ১৯৬৯ সালে একাদশ মানবিক শাখার ৭০ জন ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিজ্ঞান শাখা ও ১৯৮১-৮২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা চালু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৭৪-৭৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক (পাস) কোর্স চালু হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক (সম্মান) কোর্স এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে মাস্টার্স শেষপর্ব কোর্স সংযোজিত হয়। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস), ১৩টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স শেষপর্ব কোর্সে ১০,২০০ জন ছাত্রী অধ্যয়নরত আছে। কলেজটিতে অত্র জেলার শিক্ষার্থী ছাড়াও পাশ্ববর্তী নেত্রকোণা, ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জ, নরসিংদী এবং গাজীপুর জেলার বেশ কিছু ছাত্রী অধ্যয়ন করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা : প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য কি কি পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন? শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য এই প্রতিষ্ঠান কেন বেছে নিবে?
প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান : এখানে শ্রেণি শিক্ষাকার্যক্রম অত্যন্ত শক্তিশালী। ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস মনিটরিং করে প্রতিটি কøাস নিশ্চিত করা হয়। পরীক্ষাসমূহ যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হয় এবং স্বল্পসময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হয়। এখানে স্টুডেন্ট কাউন্সিলিং প্রথা প্রচলিত আছে। এর মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীকে কোন না কোন শিক্ষকের তদারকিতে ন্যস্ত করা হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মাসে অন্তত একবার ছাত্রীদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে কথা বলেন। প্রয়োজনে অভিভাবকদের ডেকে পরামর্শ দেন।


বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা : আপনাদের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব পরিবহন ও আবাসিক হোস্টেল সুবিধা রয়েছে কি?
প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান : দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব কোনো পরিবহন সুবিধা বিদ্যমান নেই। দুইটি হোস্টেল আছে। একটি উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির জন্য, অন্যটি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণির জন্য নির্ধারিত। দুটি হোস্টেলে সীট সংখ্যা ৪০০ থাকলেও অবস্থানরত ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৬০০ জন। আবাসন সংকুলান না হওয়ায় ছাত্রীরা রিডিং রুম, প্রেয়ার রুম এবং বিনোদন কক্ষেও অবস্থান করছে। আরেকটি হোস্টেলের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। হোস্টেলটি নির্মিত হলে ছাত্রীদের চাপ কিছুটা কমবে বলে আশা করা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা : শিক্ষার্থীদের মানসিক-চারিত্রিক বিকাশের জন্য প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব কতটুকু বলবেন কি?
প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান : ধর্মীয় শিক্ষার জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে ধর্মীয় সকল আচার অনুষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। নৈতিক শিক্ষাদান এবং দেশাত্মবোধ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাগ্রত করার জন্য শ্রেণি শিক্ষার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসাবে সাংস্কৃতিক সংঘ, ডিবেটিং ক্লাব, বিজ্ঞান ক্লাব, বিএনসিসি, রেডক্রিসেন্ট, রোভার, বাঁধন এর কার্যক্রম অত্যন্ত শক্তিশালী। শরীরচর্চা বিভাগের অধীনে নিয়মিত খেলাধুলা পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা : বর্তমান সময়ে স্লোগান হচ্ছে- ‘তরুণরাই গড়বে ডিজিটাল বাংলাদেশ’; সরকারের এই প্রত্যাশা পূরণে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেমন ভূমিকা রাখবে বলে আপনি মনে করেন?
প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান : একাদশ থেকে মাস্টার্স শেষবর্ষ শ্রেণীর ছাত্রীরা এখানে অধ্যয়নরত আছে। তাদেরকে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা : মেধাবী ও সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার জন্য আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি কি সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে?
প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান : সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক (পাস) শ্রেণীতে উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু আছে। এছাড়াও দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রীদের জন্য দরিদ্র তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা আছে। এখানে একটি ছাত্র উপদেষ্টা পর্ষদ কার্যকর আছে। এই পর্ষদ ছাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কাজ করে থাকেন। উপদেষ্টা পর্ষদের সুপারিশের প্রেক্ষিতেই ছাত্রীদের বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা : একজন আদর্শ ও দায়িত্ববান অধ্যক্ষ হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নয়নের জন্য আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
প্রফেসর মো: হাবিবুর রহমান : প্রতিটি অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফলাফল অভিভাবকের ঠিকানায় প্রেরণ এবং বছরে অন্তত দু’বার অভিভাবক সমাবেশ করে তাদের মতামতের প্রেক্ষিতে কিছু কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা।