ঢাকা টেস্টে বড় হারের পথে উইন্ডিজ

    Home ঢাকা টেস্টে বড় হারের পথে উইন্ডিজ
    ডেস্ক : মিরাজ ক্যারিয়ার সেরা ফিগার গড়েন প্রথম ইনিংসে। ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১১১ রানে অলআউট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের ঘূর্ণিতে তারা প্রতিরোধ দিতে পারেনি ব্যাটিংয়ে। তাতে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার ফলোঅন করতে পাঠিয়েছে কোনও দলকে। ৩৯৭ রানে পিছিয়ে ফলোঅন করতে নেমে পুরনো ব্যর্থতার নজিরই উপস্থাপন করেছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ২ রানেই হারায় প্রথম উইকেট। পরে সাকিব আল হাসানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট। ফেরেন ১ রান করে। কিয়েরন পাওয়েলও বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেছিলেন মিরাজের বলে। পরাস্ত হওয়ায় তার উইকেট ভেঙে দেন উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম। পাওয়েল এই ইনিংসেও ব্যর্থ হয়ে ফিরলেন ৬ রানে। দুই ওপেনারের বিদায়ে ফলো অনে পড়ে যাওয়া উইন্ডিজের অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় আরও বিবর্ণ! এর মাঝেও বেশ কিছু সুযোগ মিস করে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। সকালের দুই নায়ক ছিলেন মিরাজ আর সাকিব। দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং লাইনে এবার আক্রমণ হানলেন তাইজুল ইসলাম। আমব্রিসকে লেগবিফোরের ফাঁদে ফেলেন শুরুতে। পরের উইকেটে রোস্টন চেজকে সুযোগ দেননি থিতু হওয়ার। তাকেও বিদায় দিয়েছেন মুমিনুল হকের ক্যাচ বানিয়ে। ওয়েস্ট উইন্ডিজের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৯ রান। এর আগে ক্যারিবীয়দের ১১১ রানে গুটিয়ে দিয়ে তাদের ফলো অনে ফেলে সাকিব আল হাসানের দল। মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা ৭ উইকেট শিকারে ক্যারিবীয়দের আবার ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনের শুরুতে মিরাজ ফিরিয়ে দেন শিমরন হেটমেয়ারকে (৩৯)। নিজের বলে নিজেই দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মিরাজ। দলীয় ৮৬ রানের মাথায় উইন্ডিজরা ষষ্ঠ উইকেট হারায়। স্কোরবোর্ডে আর দুই রান যোগ হতেই আবারো আঘাত হানেন মিরাজ। এবার ফিরিয়ে দেন দেবেন্দ্র বিশুকে। এর মধ্যদিয়ে নিজের পঞ্চম উইকেট পান মিরাজ। সাকিব নতুন ব্যাটসম্যান কেমার রোচের সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি। পরের ওভারে মিরাজ তার ষষ্ঠ উইকেট তুলে নেন, ফিরিয়ে দেন কেমার রোচকে। দলীয় ৯২ রানের মাথায় উইন্ডিজ তাদের অষ্টম উইকেট হারায়। দলীয় ১১০ রানে শেন ডরউইচকে (৩৭) এলবির ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। শেষ ব্যাটসম্যান শিরমন লুইসকে এলবির ফাঁদে ফেলেন সাকিব। মিরাজ সাতটি, সাকিব তিনটি উইকেট পান। এটাই মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা টেস্ট বোলিং। ৩৯৭ রানের বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় ফলোঅন করানোর সিদ্ধান্ত নিতে দুই বার ভাবতে হয়নি টাইগার দলপতি সাকিবকে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে টাইগারদের হয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৪২ বলে ১০টি বাউন্ডারিতে করেন ক্যারিয়ার সেরা ১৩৬ রান। অভিষিক্ত ওপেনার সাদমান ইসলাম করেন ৭৬ রান। দলপতি সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৮০ রান। জাতীয় দলের আবারো ফেরা লিটন খেলেন ৫৪ রানের ইনিংস। এছাড়া, ওপেনার সৌম্য সরকার ১৯, মুমিনুল হক ২৯, মোহাম্মদ মিঠুন ২৯, মুশফিকুর রহিম ১৪, মেহেদি হাসান মিরাজ ১৮, তাইজুল ইসলাম ২৬ আর নাঈম হাসান অপরাজিত ১২ রান করেন। তাতে বিরল এক রেকর্ডে নাম লেখায় বাংলাদেশের ইনিংস। ১১ ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকের ডাবল ফিগারে যাওয়ার ঘটনা টেস্টের ইতিহাসে এ নিয়ে ঘটে মাত্র ১৪ বার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি করে উইকেট পান কেমার রোচ, দেবেন্দ্র বিশু, কার্লোস ব্রাথওয়েইট এবং জোমেল ওয়ারিকান। একটি করে উইকেট পান শিরমন লুইস এবং রোস্টন চেজ। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬৪ রানের ব্যবধানে। নিজেদের খেলা সবশেষ ৫ টেস্টে টানা দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ আর টানা তিনটিতেই হেরেছে ক্যারিবীয়ানরা। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুই ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টে চোট পেয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বদলে নেতৃত্বভার পেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করেছিলেন সাকিব। ৯ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও ধবলধোলাইয়ের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মিরপুরে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হয় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ একাদশ: সাদমান ইসলাম, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম এবং নাঈম হাসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট, কাইরন পাওয়েল, শাই হোপ, শিমরন হেটমেয়ার, সুনীল অ্যামব্রিস, রোস্টন চেজ, শেন ডরউইচ, শিরমন লুইস, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ এবং জোমেল ওয়ারিকান।

    No posts to display